কলকাতা : অবশেষে আসতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত ডেঙ্গি ভ্যাকসিন (Dengue Vaccines) । নভেম্বর মাসেই দেশ জুড়ে শুরু হচ্ছে চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল (Clinical Trial)। আইসিএমআর এবং প্যানাসিয়া বায়ো টেক লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে হবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল । সারা দেশের ২০টি কেন্দ্রে এই ট্রায়াল হওয়ার কথা। পশ্চিমবঙ্গে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হবে বেলেঘাটা নাইসেডে। ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে পরীক্ষামূলকভাবে দেওয়া হবে ডেঙ্গির টিকা।


আইসিএমআর-এর সৌজন্যে রাজ্যের একমাত্র ক্লিনিক্যাল ট্রায়ল কেন্দ্র হিসাবে থাকছে বেলেঘাটার নাইসেড। এই কথা জানিয়েছেন নাইসেডের অধিকর্তা। প্যানাসিয়া বায়ো টেক লিমিটেড ডেঙ্গি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ আগেই শুরু করেছিল। প্রথম এবং দ্বিতীয় দফার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল আগেই শেষ হয়ে যায়। চলতি বছরে মার্চ-এপ্রিলে তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হওয়ার কথা ছিল। সেই ট্রায়াল শেষ হলে বহু প্রতীক্ষিতি ডেঙ্গি ভ্যাকসিন হাতে পেত দেশবাসী। কিন্তু ভ্যাকসিনে কিছু জটিলতার কারণে সেই তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালটি পিছিয়ে যায়। ভ্যাকসিনে কিছু পরিবর্তন আনতে হয়। সেই পরিবর্তন শেষ হয়েছে। প্রায় সাড়ে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে ডেঙ্গি ভ্যাকসিন পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে। এক বছর ধরে তাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। শরীরে কী পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে ডেঙ্গি মোকাবিলার জন্য তা পরীক্ষা করে চূড়ান্ত পর্যায়ের ছাড়পত্র পেলে তবেই এই ভ্যাকসিন সাধারণ মানুষের জন্য বাজারে নিয়ে আসা হবে। এখন দেখার কতটা সাফল্য পায় এই তৃতীয় তথা চূড়ান্ত পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল।


এপ্রসঙ্গে নাইসেডের অধিকর্তা শান্তা দত্ত বলেন, "ডেঙ্গি ভ্যাকসিনের একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যেখানে ডেঙ্গির প্রবণতা বেশি সেখানে এই ভ্যাকসিনটা কাজ করবে। সেরো পজিটিভিটি কতটা আছে তা দেখে ভ্যাকসিনটা দেওয়া হবে।"


রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের পর্যালোচনা বৈঠকে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাজ্যে এক সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ৩৫৮ জন। ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে মোট আক্রান্ত ২৮ হাজার ৬৭। ডেঙ্গি সংক্রমণে শীর্ষস্থানে উত্তর ২৪ পরগনা। আক্রান্ত ৬ হাজার ৯২৫ জন। ২ নম্বরে নদিয়া, আক্রান্তের সংখ্যা ৩ হাজার ৯৬৯। তৃতীয় কলকাতা। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৪১৬ জন। এরপর রয়েছে মুর্শিদাবাদ। সেখানে আক্রান্ত ৩ হাজার ৪০৭। হুগলিতে ২ হাজার ৬০০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। হাওড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৪৬৮। বেসরকারি মতে, রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৩১ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি হিসেবে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের।