কলকাতা: গরু পাচার মামলায় (cow smuggling scam) এবার কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ কৃপাময় ঘোষকে তলব করল সিবিআই। (CBI)  আগামীকাল হাজিরা দিতে বলা হয়েছে তাঁকে। গত ৭ মার্চ, শক্তিগড়ে অনুব্রতর (Anubrata Mandal) সঙ্গে প্রাতরাশ করেছিলেন কৃপাময়। সেখানে পুলিশি ঘেরাটোপেই কেষ্টর সঙ্গে প্রায় আধঘণ্টা কথা হয় কৃপাময়-সহ ৩জনের। আসানসোল জেল থেকে কলকাতায় আনার পথে ওই ঘটনা ঘটেছিল। 


ইডির তলব আগেই...
গত মার্চের মাঝামাঝিই, ইডি গরুপাচার মামলায় আরও তিনজনকে দিল্লিতে তলব করে। নির্দেশে জানানো হয়েছিল, আগামী ২০ মার্চের মধ্যে তাঁদের হাজিরা দিতে হবে। তখনই তলব করা হয়েছিল অনুব্রত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা কৃপাময় ঘোষকে। অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের গাড়ির চালক তুফান মিদ্যাকেও একই সময়ে ডেকে পাঠায় ইডি। এ ছাড়াও, তলব করা হয় লাভপুর কলেজের নন টিচিং স্টাফ এবং রাঁধুনি বিজয় রজককে। এঁদের মধ্যে দু'জনকে দোলের দিন অনুব্রতর সঙ্গে দেখা গিয়েছিল। শক্তিগড়ের হোটেলে এক টেবিলে বসে অনুব্রতর সঙ্গে প্রাতরাশ সারেন কৃপাময় এবং তুফান।


প্রাতরাশ পর্ব...
গত ৭ মার্চ, দোলের দিন দিল্লি যাওয়ার সময় আসানসোল থেকে কলকাতার পথে শক্তিগড়ে প্রাতরাশ সেরেছিলেন অনুব্রত। সেখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা কৃপাময় এবং সুকন্যার গাড়িচালক তুফানের সঙ্গে এক টেবিলে বসে খাওয়া-দাওয়া করেন তিনি। বেশ কিছু ক্ষণ কথাও বলেন। তার পর ইডির তলবে, কৃপাময়, তুফান এবং বিজয়কে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, অন্যত্র টাকা পাঠাতে ওই  তিনজনের অ্যাকাউন্ট বিভিন্ন সময় ব্যবহার হয়েছে। একই সময়ের মধ্যে অনুব্রত-কন্যা সুকন্যাকেও ফের দিল্লিতে তলব করা হয়। তার আগে ডাকা হলেও, দিল্লিতে ইডি-র দফতরে হাজিরা দেননি অনুব্রতর  মেয়ে সুকন্যা। সূত্রের খবর, হাজিরার জন্য ইডির কাছে আরও সময় চান তিনি। তাতেই ২০ মার্চ পর্যন্ত তাঁকে সময় দিয়েছিল ইডি।


এর আগে, দিল্লিতে অনুব্রতর হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে দফায় দফায় জেরা করে ইডি। তাঁকে ছ'দিনের হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। মামলা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে কেঁদে ফেলেন মণীশ। জানান, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হয়ে কাজ করাটাই তাঁর ভুল হয়েছে। তবে ইডি সূত্রে খবর, অনুব্রতর কোটি কোটি টাকার হালহকিকত, সব জানতেন মণীশ। প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় বীরভূমের তৃণমূল সভাপতির পাশাপাশি তাঁর মেয়ে, সুকন্যা মণ্ডলও গ্রেফতার হয়েছেন। গোড়ায় আসানসোল জেলে রাখা হলেও, প্রভাবশালী তকমা দিয়ে দিল্লির তিহাড় জেলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দু'জনকেই। গত ২৮ জুলাই গরুপাচার মামলাটিকেও দিল্লির রাইস অ্যাভিনিউ কোর্টে সরিয়ে নিয়ে যেতে আদালতে আবেদন জানায় ইডি। কিন্তু শুনানি চলাকালীন আদালতে তিরস্কৃত হয় তারা। বিচারপতি রাজেশ চক্রবর্তী প্রশ্ন করেন, "কোন অধিকারে এই মামলার তদন্ত করছেন আপনারা? কেন্দ্রীয় সরকার কি আপনাদের কোনও ক্ষমতা দিয়েছে? তাহলে আপনারা কী ভাবে, ইচ্ছে মতো অন্য কোনও আদালতে মামলা সরিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন?" 


আরও পড়ুন:'যদি রাজ্যপালের কথা শুনে চলে আমি অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব', মমতার চরম হুঁশিয়ারি