পার্থপ্রতিম ঘোষ এবং কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান: শক্তিগড়ে শ্যুটআউটে খুন দুর্গাপুরের কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা! খুনের নেপথ্যে রয়েছে কয়লার সিন্ডিকেট। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই অনুমান করছে পুলিশ। সম্প্রতি কয়লা কারবারে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠেন রাজু ঝা। সূত্রের খবর, কয়লা পাচারকাণ্ডে ইডি-সিবিআই তদন্ত শুরু হওয়ায় লালা ওরফে অনুপ মাঝির গোষ্ঠী কয়লা কারবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
বর্তমানে ইসিএলের কয়লার টেন্ডারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিলেন রাজু। এর ফলে অন্যগোষ্ঠী কাজ করতে পারছিল না। সেই কারণেই কি রাজুকে টার্গেট করা হয়েছে? উঠছে প্রশ্ন। 


২৬ ফেব্রুয়ারি দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের অম্বুজা কলোনিতে বেসরকারি পরিবহণ সংস্থার দফতরের দরজার সামনে গুলি চলে। সেই অফিসে নিয়মিত যাতায়াত ছিল কয়লা মাফিয়া রাজু ঝার। গুলির চলার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজু। সেই ঘটনার সঙ্গে কি যোগ রয়েছে গতকালের ঘটনার? এর আগেও টার্গেট করা হয়েছিল তাঁকে? খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, গাড়িতে বসে থাকার অবস্থাতেই রাজু ঝা-কে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় আততায়ীরা। ঘটনাস্থলের আশেপাশের দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। আততায়ীদের গাড়ি দ্রুত চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। শুরু হয়েছে নাকা তল্লাশি। 


অন্যদিকে সূত্রের খবর, ইলামবাজারের গরুর হাটের মালিক ও গরু পাচারকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত শেখ আবদুল লতিফ বীরভূমের কয়লা কারবার দেখতেন। সেই সূত্রে লতিফের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল রাজুর। তাঁর কাছ থেকে সাহায্য নিতেন রাজু। যে গাড়িতে রাজু খুন হয়েছেন সেই গাড়িটিও আব্দুল লতিফের।


ঠিক কী ঘটেছে?


ঘড়িতে তখন রাত ৮টা বাজতে যায়। আদি ল্যাংচা মহলের সামনে এসে দাঁড়ায় রাজু ঝা-য়ের গাড়ি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, দুধ সাদা গাড়ির চালকের পাশের আসনে বসে ছিলেন রাজু ঝা। হঠাৎ তাঁর গাড়ির পাশে এসে দাঁড়ায় নীল রঙের ব্যালেনো। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই, অন্তত ৬ রাউন্ড গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় রাজুকে। গাড়ির পিছনের আসনে বসেছিলেন রাজুর ছায়াসঙ্গী ব্রতীন মুখোপাধ্যায়। তাঁকেও লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। 


আরও পড়ুন, ঝড়-বৃষ্টিতে মাটি হবে ছুটির দিনের আমেজ? জেলায় জেলায় দুর্যোগের আশঙ্কা


গুলিবিদ্ধ রাজু ও তাঁর সঙ্গী ব্রতীনকে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অনাময়ে। সেখানে মৃত ঘোষণা করা হয় রাজু ঝা-কে। ব্রতীন মুখোপাধ্যায় ভর্তি বর্ধমান মেডিক্যালে।