বোলপুর: বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নোবেলজয়ী অর্মত্য সেনকে অসম্মান করার অভিযোগ। প্রতিবাদে মিছিল করল সামাজিক মর্যাদা রক্ষা কমিটি। মিছিলে সামিল হন অধ্যাপক, আশ্রমিক, চিকিৎসক, দিনমজুর সহ বীরভূমের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। প্রতীচী থেকে মিছিল শুরু হয়ে বিশ্বভারতীর প্রথম গেটে গিয়ে শেষ হয়। সেখানেই রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী নাটকের আয়োজন করা হয়। এদিন প্রতীচীর সামনে মানববন্ধনও করেন তাঁরা।
তুচ্ছ আইনি জটিলতা নিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নোবেলজয়ী অর্মত্য সেনকে লাগাতার অসম্মান করার অভিযোগ। প্রতিবাদে মিছিল ও মানববন্ধন করল সামাজিক মর্যাদা রক্ষা কমিটি। আাগামীকাল থেকে হবে দু'দিনের প্রতিবাদ সভা। ১৪৫ ধারা লাগু থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এই জমায়েত হচ্ছে? প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
কেটে যাক অন্ধকার, আসুক আলো। অসম্মানের হাত থেকে রক্ষা পান নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য় সেন। এই আশা নিয়ে, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপের প্রতিবাদে গর্জে উঠল সামাজিক মর্যাদা রক্ষা কমিটি।
একদিকে, অমর্ত্য সেনকে দেওয়া বিশ্বভারতীর উচ্ছেদ-নোটিসের ওপর হাইকোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ, অন্যদিকে, নোবেলজয়ীকে অপমানের অভিযোগে প্রতিবাদসভার প্রস্তুতি। এই প্রেক্ষিতেই হাতে প্ল্যাকার্ড, গলায় গান নিয়ে শান্তিনিকেতনে প্রতিবাদ হল শুক্রবার সকালে।
সামাজিক মর্যাদা রক্ষা কমিটির মিছিল ও মানব বন্ধনে অংশ নেন বিশ্বভারতীর অধ্যাপক, ছাত্রছাত্রী, প্রাক্তনী, আশ্রমিক, চিকিৎসক সহ বহু সাধারণ মানুষ। সকালে মিছিল আসে প্রতীচীর সামনে। সেখানে করা হয় মানববন্ধন। তারপর প্রতীচী থেকে বিশ্বভারতীর প্রথম গেটে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। সেখানে রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী নাটক অভিনয় করা হয়। যেখানে নন্দিনী চরিত্রে অভিনয় করেন চৈতী ঘোষাল।
প্রতিবাদকারীদের অভিযোগ, সামান্য জমি নিয়ে অর্মত্য সেনকে লাগাতার অসম্মান করছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে তাঁর শান্তিনিকেতনের প্রতীচী বাড়ির ১৩ ডেসিমল জমি খালি করার নির্দেশ দেয় বিশ্বভারতী। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জমি খালি না করলে, তাঁকে উচ্ছেদ করা হবে জানিয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে নোটিসও দেওয়া হয়।
বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে শনিবার থেকে দু'দিনের প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে। অমর্ত্য সেনের বাড়ি প্রতীচীর পাশে তৈরি হয়েছে মঞ্চ।
স্থিতাবস্থা যাতে কোনও ভাবেই ব্যাহত না হয়, তার জন্য অমর্ত্য সেনের বাড়ি প্রতীচী লাগোয়া এলাকায় ১৪৫ ধারা জারি রেখেছে রাজ্য প্রশাসন। অন্যদিকে, এইসব কর্মসূচির জেরে ক্যাম্পাসের পরিবেশ ও পঠনপাঠন বিঘ্নিত হবে। এই আশঙ্কায় বোলপুরের মহকুমা শাসককে চিঠি দিয়েছে বিশ্বভারতী।
পাশাপাশি উপাচার্য-সহ বিশ্বভারতীর আধিকারিকদের প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করে শান্তিনিকেতন থানাতেও অভিযোগ দায়ের করেছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিষয়টি বিচারাধীন। আমরা আইন ও আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এলাকায় ১৪৫ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এই ধরনের জমায়েত হচ্ছে? ১৪৫ ধারা বিশ্বভারতীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিন্তু যারা প্রতিবাদের জন্য লোক জড়ো করছে তাদের জন্য নয়!