অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা : 'শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) আমার কাছে অচ্ছুৎ নন', মন্তব্য করে দিনকয়েক আগেই জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী (Kaustav Bagchi)। এবার গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের (Group D Job Seekers) মিছিলে একসঙ্গে হাঁটতে দেখা গেল শুভেন্দু ও কৌস্তভকে। মিছিলে হাঁটা নিয়ে নিজের যুক্তির কথা তুলে ধরার পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তরুণ কংগ্রেস নেতা বললেন, "সরকার যদি এই দাবি-দাওয়াতে সাড়া না দেয় কলকাতায় লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত করে এই দাবি কীভাবে ছিনিয়ে নিতে হয় সেটা সরকারকে বোঝাব।"


কৌস্তভ বলেন, "না উঠছে কংগ্রেস জিন্দাবাদ স্লোগান, না উঠছে বিজেপি জিন্দাবাদ স্লোগান। নিশ্চিতভাবে, যদি এখানে বিজেপির পতাকা থাকত তাহলে আমি আসতাম না, কংগ্রেসের পতাকা থাকলে শুভেন্দু অধিকারী আসতেন না। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, দাবিটা অরাজনৈতিক এবং ন্যায্য দাবি। বেকার ছেলে-মেয়েগুলোর তাগিদে আমাদের এখানে আসা। এগুলোর কিছুর প্রয়োজন পড়ত না, সরকার বলে দিকে চাকরি দিয়ে দেবে। সরকারের তরফেও কেউ যদি মিছিলে এসে হাঁটে এবং বলে চাকরি দিয়ে দেবে আমি তাতেও খুশি।"


ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেকের অফিসের সামনে হয় গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের এই মিছিল। হাইকোর্টে রাজ্যের আবেদন খারিজের পর চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলে বিশাল জমায়েত দেখা যায়। আত্মবিশ্বাসী কংগ্রেস নেতা বলেন, "এখন আমরা চাইছি, যেসব অরাজনৈতিক সংগঠনগুলি আছে সবাইকে একছাতার তলায় এনে লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত করে হয় নবান্ন অভিযান, নয়তো কালীঘাট অভিযান...এই ধরনের কিছু একটা করার চিন্তাভাবনা করছি। অনেক বড় কিছু অপেক্ষা করছে। সরকার যদি এই দাবি-দাওয়াতে সাড়া না দেয় কলকাতায় লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত করে এই দাবি কীভাবে ছিনিয়ে নিতে হয় সেটা সরকারকে বোঝাব। আমি তো বারবার বলছি, বঞ্চিতদের ডাকে আমি সবসময় ছিলাম, আছি, থাকব। সর্বত্র আছি। আমার কোনও ছুৎমার্গ নেই। বাংলার নিপীড়িত মানুষের স্বার্থে আমার কোনও রাজনৈতিক ছুৎমার্গ নেই। আমার কাছে পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচানোর তাগিদ অগ্রাধিকার পায়।"


এপ্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, "উনি (কৌস্তভ বাগচী) আইনি লড়াইয়ে এদের সাহায্য করেছেন। আমি তো আগেও বলেছি, ওঁর কী রাজনীতি আছে তা আমার জানার দরকার নেই। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সরকারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মানুষ লড়ছেন। তার মধ্যে কৌস্তভ অন্যতম। অনেক সোশাল ইউটিউবার, অনেক ফ্রিল্যান্সার লড়ছেন। অনেক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, পুলিশকর্মী লড়ছেন। অনেক অবসরপ্রাপ্ত বিচার বিশারদ লড়ছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে বাংলাকে বাঁচাতে গেলে, যাঁরা মনে করেন এই পরিত্রাণ দেওয়া দরকার, তাঁদের রাস্তায় নামতে হবে। এঁরা আমার উপস্থিতি চেয়েছিলেন, আমি এঁদের সঙ্গে হেঁটেছি। আইনি লড়াইয়ে সম্পূর্ণ সুরক্ষা দেব, সিনিয়র আইনজীবী দেব। আরও বড় লড়াইয়ে থাকব। আপনাদের মাধ্যমে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ-সহ এসএলএসটি, গ্রুপ ডি, আপার প্রাইমারি-সহ সবাইকে অনুরোধ করব, একেবারে একজোট হয়ে একদিন নবান্ন চলুন। লক্ষাধিক লোক নিয়ে নবান্নে চলুন। হিসাব কষতে হবে নবান্নের গেটে দাঁড়িয়ে।"