কোচবিহার: কোচবিহারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নিজের কনভয়ের উপর হামলায় হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলেনতা।
আরও পড়ুন, SIR - এর নামে NRC করার চেষ্টা, সবাই ভোটার লিস্টে নাম তুলবেন , ঘাটালে গিয়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী
এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে এসেছি। মমতাকে হারিয়েছি, তাই এত রাগ। আমি বুলেটপ্রুফ গাড়িতে এসেছি। ..অধিকাংশ যা কার্টুন দেখলাম, ৯০ ভাগ রোহিঙ্গা, এবং বাংলাদেশি মুসলমান। যেই খাগড়াবাড়ি ঢুকেছি, দেড় হাজার উন্মত্ত হায়নার দল, পাগল কুকুরের দল, চোরের ব্যাটা চোর উদয়ন গুহর নেতৃত্বে, ঝাঁপিয়ে পড়েছে।..আমি যদি ওই বুলেট প্রুফ গাড়িতে না থাকতাম, আপনারা আজকে মৃতদেহের সামনে দাঁড়িয়ে ফুল দিতেন। পাথর দিয়ে ভেঙেছে বুলেট প্রুফ গাড়ি। প্রত্যক্ষ খুনী যদি উদয়ন গুহ হয়, তাহলে পরোক্ষ খুনী রাজীব কুমার। আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব। এর হিসাব আমি নেব। বদল হবে। বদলাও হবে। উদয়ন গুহ তোমার সঙ্গে আমার হিসাব হবে।'
ভেঙে চুরমার বুলেটপ্রুফ গাড়ির কাচ, একের পর এক গাড়িতে পাথরবৃষ্টি। কনভয়ে থাকা পুলিশের গাড়ির কাচও অবশিষ্ট নেই। কোচবিহারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কারও হাতে তৃণমূলের পতাকা,কারও হাতে কালো পতাকা। বিরোধী দলনেতার গাড়ি ঘিরে চলল তুমুল বিক্ষোভ, স্লোগান। এদিন ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্থা ও এনআরসি-র প্রতিবাদে কোচবিহারে মোট ১৯ টি জায়গায় সভা ছিল তৃণমূলের। একই সঙ্গে এদিনই কোচবিহারের এসপি ও প্রসাসনিক কর্তাদের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল শুভেন্দু অধিকারীর। খাগড়াবাড়িতে যে রাস্তা দিয়ে বিরোধী দলনেতার গাড়ি যাচ্ছিল, সেই রাস্তার পাশেই ছিল তৃণমূলের প্রতিবাদ সভা। সেখানে পুলিশ ব্যারিকেড করে রাখলেও তৃণমূল কর্মীরা ব্যারিকেডের বাইরে বেরিয়ে যায়। এরপরই শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে চলে হামলা।
কোচবিহারের পুলিশ সুপারের দফতরে শুভেন্দু অধিকারীদের ডেপুটেশন কর্মসূচি। আর সেদিনই, জেলা জুড়ে তৃণমূলের ১৯টি প্রোগ্রাম! পুলিশের অনুমতি না মেলায়, যেখানে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে বিজেপি বিধায়কদের। সেখানে তৃণমূলের কাছে ছিল পুলিশ-প্রশাসনের অনুমতিপত্র? কোচবিহারে, শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে হামলার ঘটনার পর, উঠছে এমনই একাধিক প্রশ্ন। বাগডোগরায় পৌঁছে, মঙ্গলবার, সড়কপথে আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা হয়ে, কোচবিহার জেলায় প্রবেশ করেন শুভেন্দু অধিকারী।
এরপর প্রথমে ঘোকসাডাঙায়,আর এরপর, খাগড়াবাড়িতে, তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। দেখানো হয় কালো পতাকা, ভাঙা হয় গাড়ির কাচ। উল্লেখ্য়, NRC, ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধন, ভিন রাজ্য়ে বাঙালি হেনস্থার অভিযোগ-সহ একাধিক ইস্য়ুতে মঙ্গলবার জেলা জুড়ে মোট ১৯টি কর্মসূচির ডাক দেয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। প্রশ্ন হচ্ছে, হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে, শুভেন্দু অধিকারীদের ঘোষিত কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও, পুলিশ তৃণমূলকে, তাদের প্রোগ্রামের জন্য় কীভাবে অনুমতি দিল? আদৌ কি অনুমতি দিয়েছিল? পুলিশ সূত্রে খবর, অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে, তৃণমূলের বক্তব্য়, পুলিশ-প্রশাসনের কাছে অনুমতি পত্র দেওয়া হলে, তারা প্রত্য়াখ্য়ানও করেনি।