শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : প্রতিদিনের মতোই নির্দিষ্ট সময়ে বসেছিল স্কুল! পড়ুয়ারাও হাজির হয়েছিল যথা সময়ে। 
কিন্তু হঠাত্‍ই প্রথম পিরিয়ডের পরই বেজে গেল ছুটির ঘণ্টা। হুড় হুড়িয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেল সক্কলে! কিন্তু হঠাত্‍ করে কেন ছুটি? 


কারণ, ‘খেলা হবে’ দিবসে তৃণমূলের উদ্যোগে ফুটবল টুর্নামেন্ট হবে স্কুলেরই মাঠে। কোচবিহারের তুফানগঞ্জের দেউচড়াই হাইস্কুলের এই ঘটনাতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক!


মঙ্গলবার ‘খেলা হবে’ দিবসে তুফানগঞ্জের দেউচড়াইয়ে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছিল তৃণমূল। সূত্রের খবর, আশেপাশে কোনও জুতসই মাঠ না থাকায়, স্থানীয় হাইস্কুলের মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্ট করার সিদ্ধান্ত নেয় শাসকদল। 
কিন্তু স্কুল চলাকালীন খেলা হবে কী করে? এই পরিস্থিতিতে ছুটি দিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক!

আরও পড়ুন :  কলকাতার ১৩টি ওয়ার্ডকে ‘অতি ডেঙ্গি প্রবণ’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, আপনার ওয়ার্ড আছে এর মধ্যে ?


দেউচড়াই হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক  অরবিন্দ কোঙার জানান, ' তৃণমূলের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল। তাই আমরা এক পিরিয়ডের পর ছুটি দিয়ে দিয়েছিলাম।' 


পড়ুয়ারাও জানান, খেলা হবে, তাই আমাদের তো ছুটি দিয়ে দিয়েছে। 
 
কিন্তু তৃণমূলের কর্মসূচির জন্য সরকারি স্কুলে নামমাত্র ক্লাস করিয়ে ছুটি কেন? এই প্রশ্ন সামনে রেখে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। SFI রাজ্য কমিটির সদস্য, মেহবুব আলম জানালেন, ' আমরা খেলার বিরোধী নই। কিন্তু যেভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে খেলা দিবস পালন চলছে, তার বিরুদ্ধে আমরা। দুর্নীতি থেকে নজর ঘোরাতে এসব করা হচ্ছে।' 


বিজেপি নেতা বিরাজ বসুর অভিযোগ , ' তৃণমূলের খেলা মেলাই মানেই তো টাকা, তোলাবাজি। তাই স্কুল শিক্ষা, এসবের গুরুত্ব নেই। ' 


এই সব অভিযোগকে আমল দিতেই রাজি নয় তৃণমূল । কোচবিহারের জেলা সভাপতি অভিজিত্‍ দে ভৌমিক বললেন, ' খেলা তো ছাত্রযুবদের জন্যই। ছাত্ররা যদি ক্লাসে থাকে, তাহলে আর কী করে খেলা হবে। ' 


এদিন ফুটবল টুর্নামেন্ট উপলক্ষ্যে তৃণমূলের স্থানীয় একাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবার বুধবার রাজ্যজুড়ে 'খেলা হবে দিবস' পালন করে তৃণমূল। ১৪ অগাস্ট বেহালায় গিয়ে দলের তরফে খেলা দিবস পালনের কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । 'খেলা হবে' দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে এদিন ট্যুইটও করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, 'সবাইকে খেলা হবে দিবসের শুভেচ্ছা। গতবারের বেনজির সাফল্যের পর এ বছর যুব সম্প্রদায়ের আরও বেশি অংশগ্রহণ কামনা করি। এই দিনটিতে তরুণ প্রজন্ম নিজেদের উদ্যম তুলে ধরুক ৷ যাঁরা উন্নতির সবথেকে বিশ্বস্ত পথপ্রদর্শক ৷ ' খেলা হবে দিবসে ট্যুইট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।