শুভেন্দু ভট্টাচার্য, মেখলিগঞ্জ: রাজ্যে ফের শিল্পের জন্য জমি নিয়ে জটিলতা। পুনর্বাসনের জন্য পাঁচ কাঠা জমি দিলেই হবে না। চাষের জন্য দিতে হবে আরও তিন বিঘা জমি। তিস্তার চরে কারখানা তৈরি হলে পরিবারের একজনকে দিতে হবে চাকরি। এমনই দাবিতে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে মিছিল করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের স্পষ্ট বক্তব্য, দাবি না মানা হলে জমি ছাড়বেন না। বাধার মুখে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে তিস্তার চরে শিল্পতালুকের জন্য প্রস্তাবিত জমি জরিপ না করেই ফিরতে হল আধিকারিকদের।


আরও ক্ষতিপূরণ দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের


এই জমিতে ২৩৬টি পরিবারের বসবাস। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের তরফে পুনর্বাসনের যে ব্যবস্থা করা হয়েছে তা যথেষ্ট নয়। সাহের আলি মণ্ডল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেছেন, ‘প্রতিটি পরিবারকে তিন বিঘা করে জমি দিতে হবে। প্রশাসন আলোচনা করুক। কারখানা হলে প্রত্যেক পরিবারের একজনের স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে।’ জয়নাল মিয়া নামে অপর এক স্থানীয় বাসিন্দার দাবি, ‘আমাদের এখান থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। তিন বিঘা জমি লাগবে। আমরা সরকারের বিরুদ্ধে না। দাবিদাওয়া মানা না হলে আরও আন্দোলন হবে।’


আরও পড়ুন দালাল ছাড়া ভূমি রাজস্ব দফতরে কাজ করতে পারেন না সাধারণ মানুষ, সরব উদয়ন গুহ


এখানকার বাসিন্দাদের দাবি নিয়ে নিজতরফ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুনীল রায় বলেছেন, ‘দাবিমতো সবাইকে চাষের জমি দিলে আর শিল্প গড়ে তোলা সম্ভব নয়। ৪০০ বিঘার মতো জমি দরকার। সবাইকে তিন বিঘা করে জমি দিলে শিল্পের জন্যই জমি থাকবে না।’


জমিদাতাদের দাবি প্রসঙ্গে মেখলিগঞ্জের বিডিও জানিয়েছেন, সবার সঙ্গে দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


শাসক দলকে আক্রমণ বিজেপি-র


এদিকে, ঘটনায় শাসক শিবিরকে একহাত নিয়েছে বিজেপি। মেখলিগঞ্জ শহর মণ্ডল বিজেপি সাধারণ সম্পাদক আশেকার রহমান বলেছেন, ‘চর এলাকায় রাজ্য সরকার যেভাবে জোর করে অধিবাসীদের উচ্ছেদের পরিকল্পনা করছে, তাকে ধিক্কার জানাই। পরিবারগুলির দাবি মানতে হবে। মন্দির-মসজিদ, স্কুল করা উচিত। না হলে আন্দোলন হবে।’


বিজেপি-র আক্রমণের পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। কোচবিহার তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য আব্দুল জলিল আহমেদ বলেছেন, ‘রাজ্য সরকার আর্থিক সাহায্যের কথা বলেছে। এটা জিরো ক্ষতিপূরণের জায়গা। বিজেপি-র চক্রান্ত চলছে, যাতে উন্নয়ন না নয়। এটা কারও নিজের জমি নয়।’


কোন পথে জমি নিয়ে জটিলতা দূর হয়, সেটাই এখন দেখার।