কমলকৃষ্ণ দে, গুসকরা, পূর্ব বর্ধমান: গ্যাস সিলিন্ডার, মিড-ডে মিলের বাসন, শৌচাগারের কল-এমন আরও অনেক কিছু ছিল। কিন্তু কোথাও-কিছুতে হাত পড়েনি। কিন্তু আলমারি বেবাক ফাঁকা। সেখানেই ছিল প্রচুর বই। এমনই আশ্চর্য চুরির ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের গুসকরা শহরে। সেখানে উত্তরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বইয়ের আলমারি থেকে চুরি গেল একাধিক গল্পের বই। সঙ্গে চুরি গিয়েছে একটি সিলিং ফ্যানও। স্কুল কর্তৃপক্ষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। বই চোরের খোঁজে নেমেছে পুলিশ। চুরি করতে এসে  বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। রান্নাঘরে ঢুকে খাবার খেয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু স্কুলে ঢুকে বই চুরি? নাহ, এমন ঘটনা মনে করতে পারছেন না পুলিশকর্মীরাও। 


চুরির তালিকা:
স্কুল খোলার পর এমন ঘটনা চোখে পড়ে শিক্ষকদের। ওই স্কুলে ৫৯ জন পড়ুয়া রয়েছে। রয়েছেন তিন জন শিক্ষিকা। সম্প্রতি স্কুলে রং করানো হয়েছে। স্কুল সূত্রের খবর, সোমবার স্কুল খোলার পরে শিক্ষিকারা দেখেন, অফিস ঘরের আসবাবপত্র লন্ডভন্ড। ওই ঘরেই রয়েছে স্কুলের গ্রন্থাগারেরআলমারি। সেখানে নতুন ও পুরনো মিলিয়ে শতাধিক গল্পের বই ছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আলমারি থেকে ক্ষীরের পুতুল, বিশ্বের সেরা গোয়েন্দা গল্প, আম আঁটির ভেঁপু, পথের পাঁচালী, উপেন্দ্রকিশোর রচনা সমগ্র, টুনটুনির বই, গুপী গাইন বাঘা বাইনের মতো ৫৩টি নতুন বই চুরি গিয়েছে। সেই সঙ্গে চুরি গিয়েছে অফিস ঘরের সিলিং ফ্যান। ওই ঘরের মধ্যেই ছিল দু’টি গ্যাস সিলিন্ডার ও বাসনপত্র। রান্নার গ্যাসের অগ্নিমূল্যের বাজারে চোর সে সব নেয়নি। বাসনপত্রেও তার নজর পড়েনি। অন্যান্য ক্লাসঘরের সিলিং ফ্যানেও হাত পড়েনি। চোরের এমন কাণ্ড দেখে তাজ্জব এলাকাবাসী থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ সকলেই।


কীভাবে ঢুকল চোর? 
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, অফিস ঘরের জানালার একটি পাল্লার একাংশ ভাঙা  ছিল। কিন্তু জানলার রেলিং ঠিকই ছিল। তা হলে চোর ঢুকল কীভাবে? ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
সোমবার গুসকরা ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মহুয়া খাতুন। তিনি বলেন, 'সর্বশিক্ষা মিশনের টাকায় বইগুলি কেনা হয়। সেই সমস্ত বই পড়ুয়াদের নিয়মিত দেওয়া হত পড়ার জন্য। ৫৩টি বই চুরি করে চোর পালিয়েছে।'


আরও পড়ুন: কোথাও ঘোলা জল, কোথাও সরু সুতোর মতো ধারা, জল-সঙ্কটে নাকাল চন্দ্রকোণা