শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: গীতালদহের পর এবার শীতলকুচি (Sitalkuchi News)। গ্রামবাসীর অস্বাভাবিক মৃত্য়ুতে কোচবিহারে ফের বিতর্কে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সীমান্তে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল সীমান্তরক্ষীদের বিরুদ্ধেই। তাতে ফের একবার বিতর্কে BSF. তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজাও। অভিযোগ নিহতকে পিটিয়ে মেরেছে BSF (Cooch Behar News).


ফের বিতর্কে জড়াল BSF. এবার কোচবিহারের শীতলকুচিতে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল সীমান্তরক্ষীদের বিরুদ্ধে। নিহতের নাম জেলাল মিঞা বলে জানা গিয়েছে। তিনি বড়মরিচা এলাকার বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে দাবি, দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। শনিবার ভোর থেকে নিখোঁজ ছিলেন জেলাল। রবিবার সকালে খোঁজ করতে গিয়ে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে তাঁর মৃতদেহের সন্ধান মেলে।

কিন্তু, আশ্চর্যের বিষয় হল, মৃতের শরীরেও ছিল BSF-এর উর্দি। আর তাকে ঘিরেই উঠছে প্রশ্ন। নিহত শ্রমিকের গায়ে BSF-এর উর্দি এল কোথা থেকে, জোর করে কেউ পরিয়ে দিয়েছেন, তা না হলে তিনি কোথা থেকে উর্দি পেলেন, উঠছে এমন একাধিক প্রশ্ন। একদিকে যখন এই প্রশ্নগুলি উঠছে,  BSF-এর বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ তুলছে মৃতের পরিবার।


নিহতের আত্মীয় আমড়া বিবি বলেন, "দিল্লিতে খেটে ভাত খায়। জমিজমা কিছু নেই। একে যে মারল, তার আমরা বিচার চাই। বিএসএফের পোশাক পরা দেখছি। বিএসএফ-ই মেরেছে। আমরা পাবলিকের পোশাক দেখিনি। বিএসএফ-এর পোশাক দেখেছি। বিএসএফ-ই মেরেছে।"


পুলিশ সূত্রে দাবি, বিএসএফ-এর ৭৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের তরফে রবিবার সকালে জেলাল মিঞাকে অচৈতন্য অবস্থায় মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের পরিবারের তরফে শীতলকুচি থানায় বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই নিয়ে বিএসএফ-এর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।

তবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে, সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ-এর হাতে গ্রামবাসীর মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। খবর পেয়েই বড়মরিচা গ্রামে পৌঁছে যান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ ও কোচবিহার জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন। উদয়ন বলেন, "এমন ভাবে বিএসএফ মেরেছে, পরনে কাপড় ছিল না। তাই নিজেদের ইউনিফর্ম জড়িয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। আর পদে থাকা উচিত না। হত্যাকারীদের শাস্তি চাই।"

কোচবিহারে বিজেপি-র জেলা সভাপতি সুকুমার রায় আবার বলেন, "গরুপাচার থেকে চোরাচালান, অনেক নিয়ন্ত্রণে। এখন বিএসএফ সক্রিয়। তা দেখে অনেকে, যারা চোরাকারবারির সঙ্গে যুক্ত, তাদের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তারা গিয়ে এসব বলছে। বিএসএফ-এর মনোবল ভেঙে দিয়ে চোরাচালানকারীদের সাহায্য করছে তারা।"

এর আগে, গত ২৪ ডিসেম্বর কোচবিহারেরই গীতালদহে ২৪ বছরের রাজবংশী যুবক প্রেম বর্মনকে ব্রাশ ফায়ার করে মারার অভিযোগ ওঠে বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে। তা নিয়ে সংঘাতের পারদ চড়েছিল সপ্তমে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। ফের একবার রাজনীতি তেতে উঠছে সেখানে। জানা গিয়েছে, এ নিয়ে জোরাল আন্দোলনে নামবে তৃণমূল।