শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: নতুন অঞ্চল সভাপতি ঘোষণার পর থেকে, কোচবিহারের মাথাভাঙায়, তৃণমূলের অন্দরে অশান্তি লেগেই রয়েছে। দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ প্রশমনে এবার উদ্যোগী হল জেলা নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রে খবর, আলোচনার মাধ্যমে ক্ষোভ না মিটলে, শোকজ করা হবে বিক্ষুব্ধদের।
কবে কোথায় গন্ডগোল:
৪ নভেম্বর, ফুলবাড়ি। ৫ নভেম্বর, রুইডাঙা। ৮ নভেম্বর, বড় শৌলমারি। ১০ নভেম্বর, প্রেমেরডাঙা। ১১ নভেম্বর, লতাপোতা। ফুলবাড়ি থেকে রুইডাঙা, বড় শৌলমারি থেকে প্রেমেরডাঙা কিংবা লতাপোতা, সব জায়গাতেই এক ঘটনা। নভেম্বরে, অঞ্চল সভাপতি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই, কোচবিহারের মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকে বারবার তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে।
১০টি অঞ্চলের মধ্যে, ৫টিতেই নতুন অঞ্চল সভাপতিদের নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে মাথাচাড়া দিয়েছে অসন্তোষ। কোথাও, নতুন সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কর্মী-সমর্থকরা। কোথাও মিছিল করেছেন। কোনও আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতা।
কী পদক্ষেপ:
ভোটের আগে, নেতা-কর্মীদের এই ক্ষোভ-প্রশমনে উদ্যোগী হল কোচবিহার তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর জন্য বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি, তৃণমূল নেতা উমাকান্ত বর্মন, মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি, প্রদীপরঞ্জন রায় ও প্রাক্তন মন্ত্রী তথা, তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, আলোচনার মাধ্যমে ক্ষোভ না মিটলে, শোকজ করা হবে বিক্ষুব্ধদের। কোচবিহারের তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, 'একটা সমস্যা হয়েছিল। আমি ও চেয়ারম্যান শোকজ করা হবে সিদ্ধন্ত নিয়েছি। ইতিমধ্যে ইতিবাচক রেসপন্স পেয়েছি। সভাধিপতি, ব্লক সভাপতি ও প্রার্তন মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ ব্যাপারটা দেখছেন। মিটে যাবে। আমাদের মনে হচ্ছে শোকজ করতে হবে না। প্রত্যেকেই ভালো লিডার। সিদ্ধন্ত নিয়ে রেখেছি। দলে থেকে দলের সিদ্ধান্ত মানতে হবে।'
বিজেপির কটাক্ষ:
তৃণমূলের এই অন্তর্দ্বন্দ্বের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। কোচবিহারের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, 'তৃণমূলের সবাই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জড়িত। অনেক সভাপতি এল গেল। কেউ ঠিক করতে পারেনি। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। ভাগাভাগির রাজনীতির ব্যাপার আছে। কর্মীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। দলের মধ্যে থেকেই বিদ্রোহ।'
জেলার ছবি:
বর্তমানে কোচবিহার জেলা পরিষদের ৩৩টি আসনের মধ্যে সবকটিই তৃণমূলের দখলে রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রেও এক ছবি। ১২টি আসনের মধ্যে ১২টিই তৃণমূলের দখলে। ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে ১২৭টি, একটি বিজেপির। যদিও ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচন ও ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে, কোচবিহারে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে দিয়েছিল বিজেপি। আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোটে কী হবে? সবার নজর সেদিকেই।
আরও পড়ুন: ক্লাস টু পাস করে ডাক্তারি! চাইলেন ২৮ হাজার, জলপাইগুড়ির এই 'ভুয়ো' ডাক্তারকে চেনেন?