শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: ফের কোচবিহারে সামনে এলে তৃণমূলের গোষ্ঠীবিবাদ। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে জেলার নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে পদ ছেড়ে সরে দাঁড়ালেন মাথাভাঙার তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের ২ নেতা। এর আগে তুফানগঞ্জেও একই ঘটনা ঘটেছে। 


এর আগে তুফানগঞ্জে পদত্য়াগ করেছেন ১৪ জন যুব তৃণমূল নেতা। তারপরেই মাথাভাঙায় পদত্য়াগ ২ তৃণমূল নেতার। একের পর এক ঘটনা ক্রমশ সামনে আসছে কোচবিহারের তৃণমূলের অন্দরের সমস্যা। দলীয় নেতত্বের ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে পদ ছাড়লেন মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি ধনীরাম বর্মন ও ওই ব্লকেরই তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তমিজ উদ্দিন মিয়া। 


কী অভিযোগ:
দলীয় সিদ্ধান্তকে মান্য়তা দিয়ে দলীয় পদ থেকে মুক্তি চাই, সম্প্রতি ফেসবুকে এই পোস্ট করেন মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি ধনীরাম বর্মন। সূত্রের খবর, আদালতের নির্দেশে যে গ্রুপ ডি কর্মীদের চাকরি গেছে, সেই তালিকায় নাম রয়েছে এই যুব তৃণমূল নেতার। তাঁর দাবি, সম্প্রতি দলে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন। এরইমধ্য়ে, জেলা সভাপতির উদ্দেশে তোপ দেগে পদ ত্য়াগের কথা ঘোষণা করেন তিনি। 
মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের পদত্য়াগী যুব তৃণমূল নেতা ধনীরাম বর্মনের দাবি, 'গতকাল সোশ্য়াল মিডিয়ায় জানতে পারি, ৯টি অঞ্চলের কমিটি গঠন হয়েছে। দেখি, ব্লকের নেতৃত্বদের নিয়ে সভাপতি মিটিং করে। আমায় ডাকেনি। যারা সংগঠনে নেই, তারাও ছিল। যাঁদের মানুষ ছুঁড়ে ফেলেছে, গ্রহণযোগ্য়তা নেই। তাঁরা আছে। অভিজিৎ দে ভৌমিক আমাকে আমন্ত্রণ করেনি। কখনওই করে না। অভিজিৎ দে ভৌমিকের নির্বাচনী কমিটির বিরোধিতা করে ইস্তফা পত্র দিতে যাব।'


পাল্টা অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, 'উনি ইতিপূর্বে পদত্য়াগ পত্র দিয়ে গেছেন। যেদিন গ্রুপ ডি-তে আদালতের নির্দেশে নাম বাদ গেছে, সেদিনই পদত্য়াগ পত্র চেয়ে নিয়েছি। যুব নেতৃত্বরা সিদ্ধান্ত নেবেন। সায়নী ঘোষ, জেলা সভাপতি কমলেশ অধিকারী তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন।' অন্য়দিকে, দলীয় নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুলে, পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তমিজ উদ্দিন মিয়া। তিনি বলেন, 'আমি ৯ বছর অঞ্চল কমিটির সভাপতি ছিলাম। পরে মাথাভাঙায় সংখ্য়ালঘু সেলে ছিলাম। শুধু পদটাই বড়। কোনও যোগাযোগ নেই। পরামর্শ নেই। আমার সঙ্গে টপ টু বটম বিমাতৃসুলভ আচরণ। আমার পক্ষে পদ আঁকড়ে থাকতে আমি রাজি নই। ইস্তফা দিচ্ছি জেলা সভাপতির কাছে।'


গত সোমবারই তুফানগঞ্জে যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে, পদত্য়াগ করেন ১৪ জন বুথ সভাপতি। আর এবার, জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে পদ ছাড়লেন যুব তৃণমূল ও তৃণমূলের ২ নেতা। যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। 


গত লোকসভা ভোটের সময় থেকেই উত্তরবঙ্গের অন্য অনেক জেলার মতো কোচবিহাকেও মাটি শক্ত করেছে বিজেপি। তৃণমূলের অন্দরের এই সমস্যা পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপিকে সুবিধায় ফেলবে? উত্তর দেবে সময়। 


আরও পড়ুন: SSKM-এ ভর্তি নেওয়া হল না জিতেন্দ্রকে, পাঠানো হল প্রেসিডেন্সি জেলে