শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: দু’সপ্তাহ পর, একুশে জুলাই। দু’বছর পর, ফের ধর্মতলায় (Dharmtala) হতে চলেছে তৃণমূলের (TMC) শহিদ সমাবেশ। জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে প্রস্তুতি পর্ব। কিন্তু, এরইমধ্যে কোচবিহারে (Coochbehar) দেখা গেল অন্য ছবি।
একই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে নেমেছে তৃণমূলের একাধিক গোষ্ঠী। একদিকে, নিজের অনুগামীদের নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছেন, তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। অন্যদিকে কর্মীদের নিয়ে আলাদাভাবে, বৈঠক-সমাবেশ করছেন জেলার তৃণমূলের চেয়ারম্যান গিরিন্দ্রনাথ বর্মণ।
আবার, তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ শুধুমাত্র দিনহাটা বিধানসভাকেন্দ্রের মধ্যে দলের কর্মীদের নিয়ে কর্মসূচি করছেন। নেতার কথায়, "আমি চাই সবাই একসাথে চলুক। কার দোষ কম, কার দোষ বেশি, এসব নিয়ে খোঁজ খবর করতে গেলে জীবনেও মিটবে না। সবার এগিয়ে এসে... এটাই উদ্দেশ্য হওয়া উচিত, ও এক পা এগোলে, আমি দু পা এগোবো। বা ও এগোনোর আগে, আমি এগোবো.. এই মানসকতা তৈরি করে... অনেক সময় হয়, তোমার মঞ্চে দাঁড়িয়ে তোমার পক্ষে বলতে গিয়ে আরেকজনকে আঘাত করে ফেললাম।"
আরও পড়ুন, জামাটিতে ঠিক কতগুলি ছিদ্র রয়েছে? সঠিক উত্তর দিতে পারেননি অধিকাংশই!
সেই সঙ্গে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তৃণমূল বিধায়ক। তিনি বলেন, "দিনহাটায় কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। কারও সঙ্গে কারও ভাগাভাগি নেই। ভাল আছি। কারও বিরুদ্ধে বলতে হচ্ছে না। কেউ আমার বিরুদ্ধে বলছে না।"
একুশে জুলাইয়ের ‘পৃথক’ প্রস্তুতি চলছে। তৃণমূলের ‘দ্বন্দ্ব’ যেন প্রকাশ্যে। কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির সদস্য আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, "এটা তো আমি আগেই বলেছি, সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। এই মানসিকতা নিয়ে চলতে হবে। এককভাবে কেউ চলার চেষ্টা করবে না। এর পরিনাম ভালো হবে না। ও কেন এরকম করছে বলতে পারব না। আমার একটাই কথা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ইনভলভ না হয়ে, সবাই মিলে কাজ করতে হবে। তা হলেই দলের মঙ্গল।"
কোচবিহারে তৃণমূলের ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব’ নিয়ে কটাক্ষ বিজেপির। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, "আপনারা জানেন, কমল গুহর দৌলতে ও রাজ্যের নেতা ছিল। তৃণমূলের দৌলতে জেলার নেতা হয়েছে। এখন মহকুমার নেতা। এরপর দিনহাটার নেতা হয়ে যাবেন।"
ওয়াকিবহাল মহলের মত, কোচবিহার জেলায় তৃণমূল নেতাদের মধ্যে মতানৈক্য এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে দলের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ জেলার রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে নিজের বিধানসভায় এলাকাতেই দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নেতাদের মধ্যে মনোমালিন্য মেটাতে কতটা উদ্যোগী হয় রাজ্য নেতৃত্ব সেটাই এখন দেখার।