শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলের এক নেতা ও তাঁর স্ত্রীকে পুরভোটে প্রার্থীপদ না দেওয়ার দাবিতে দরবার দলেরই একাংশের। চিঠি পাঠানো হল তৃণমূলের (TMC) জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে।  এ নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে কোচবিহারের (Coochbehar) মাথাভাঙায়। যদিও দম্পতির দাবি, কিছু লোক কারও উস্কানিতে এই কাজ করলেও পরে ভুল বুঝতে পেরেছেন।  


রাজ্যের শতাধিক পুরসভার মতোই, কোচবিহারের মাথাভাঙা পুরসভার ভোটের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি। অথচ টিকিট পেতে শুরু হয়ে গেছে তদ্বির-তত্‍পরতা।  


মাথাচাড়া দিচ্ছে মতবিরোধও। পরিস্থিতি এমনই যে, এক নেতা ও তাঁর স্ত্রীর প্রার্থীপদের বিরোধিতা করে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে দরবার করলেন তৃণমূলের একাংশ। যদিও ওই দুই নেতা-নেত্রীর দাবি, যাঁরা আপত্তি তুলেছিলেন, তাঁরা ভুল বুঝতে পেরেছেন।   


এই দাবি ও পাল্টা দাবির সূত্রে জলঘোলা শুরু হয়েছে কোচবিহারের মাথাভাঙায়। যাঁদের প্রার্থী হওয়া আটকাতে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশের এত তত্‍পরতা, সেই চন্দন দাস মাথাভাঙা পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান। তাঁর স্ত্রী কল্যাণী পোদ্দার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন ও তৃণমূল নেত্রী।


আরও পড়ুন ; বিজেপির বিক্ষুব্ধদের বাড়িতে তৃণমূল, ৩ দিনের মাথায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক নিশীথ-বার্লার 


এই দম্পতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে দরবার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, দুজনের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। 


কোচবিহারে আইএনটিটিইউসি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক আলিজার রহমান বলেন, এই ধান্দাবাজরা যদি টিকিট নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগে, তা দলের পক্ষে দুর্ভাগ্যজনক। টিকিট পেলে দলকে খেসারত দিতে হবে। আমি দলের কর্মী হিসেবে চাই, দল যেন স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের প্রার্থী করে।


অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, মাথাভাঙার নাগরিকদের থেকে মাস পিটিশন পেয়েছি। ৯৪ জনের সই আছে। আমি এটা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠাব।


যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল নেত্রী কল্যাণী পোদ্দারের দাবি, কারও কারও উস্কানিতে কয়েকজন অভিযোগ জানিয়েছিলেন। পরে তাঁরা ভুল বুঝতে পেরে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। 


প্রার্থীপদ নিয়ে ডামাডোল শুরু হওয়ায় তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি নেতা প্রণব পাল বলেন, এটা ওদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে তৃণমূল আর গোষ্ঠীকোন্দল সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে।


পুরভোটের আগে দলীয় বিবাদ তৃণমূল নেতৃত্ব কীভাবে মেটায়, সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।