শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : লক্ষ্মীলাভে উদ্যোগী গ্রামের বেশিরভাগ মহিলা মৃত্ শিল্পী। তাঁরাই তৈরি করেন লক্ষ্মীর পট ও প্রতিমা। এবছর বিক্রি ভাল হওয়ায় কোচবিহারের তুফানগঞ্জে চিলাখানায় মৃত্ শিল্পীদের মুখে হাসি ফিরেছে। তাদের তৈরি লক্ষ্মীর পট ও প্রতিমা পাড়ি দিচ্ছে মেঘালয়, অসমের মতো ভিন রাজ্যে। পাশাপাশি কোচবিহারের পাশাপাশি শিলিগুড়ির পাইকারী প্রতিমা বিক্রেতারাও চিলাখানার মহিলা মৃৎ শিল্পীদের থেকে লক্ষ্মীর পট ও প্রতিমা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
করোনা পরিস্থিতিতে গতবছর লক্ষ্মী ছিল চঞ্চলা। বাণিজ্যে লক্ষ্মীর বসত হয়নি। সেই ক্ষতি সামলে এবছর লক্ষ্মীর মুখ দেখলেন গ্রামের মহিলারা। তাঁদের তৈরি লক্ষ্মীর পট ও প্রতিমা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও পাড়ি দিয়েছে অসম, মেঘালয়ে। কোচবিহারের তুফানগঞ্জের চিলাখানা ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম পালপাড়ায় মৃত্ শিল্পীদের বসবাস। এখানকার মহিলাদের তৈরি লক্ষ্মীর পটের চাহিদা রয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে। প্রায় পঁচিশ জন মহিলা মৃৎ শিল্পীদের কার্যত দম ফেলার সময় নেই এখন। গতবছর কারবার ধাক্কা খেলেও এবছর অবশ্য লক্ষ্মী এসে বসেছেন এই মহিলা কারিগরদের দাওয়ায়। লাভের মুখ দেখেছেন তাঁরা।
তুফানগঞ্জের মৃত্ শিল্পী অঞ্জলি পাল বলেছেন, 'গতবছর লকডাউনের জেরে সেভাবে প্রতিমা বিক্রি হয়নি, তবে এবছর ভালই বিক্রি হয়েছে। আমরা গ্রামের মহিলারা এই কাজ করি। প্রতিমা তৈরির বিভিন্ন উপকরণের দাম আগের থেকে কার্যত দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে, যার জেরে পট হোক বা প্রতিমা, সব লক্ষ্মীমূর্তিই বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এবারে আমাদের তৈরি লক্ষ্মীর পট ও প্রতিমা পাড়ি দিচ্ছে অসম, মেঘালয়েও।'
আরও পড়ুন- হাতির হাত থেকে ফসল বাঁচাতে বাঁকুড়ার রামকানালি গ্রামে ১২৩ বছর ধরে চলছে গজলক্ষ্মীর আরাধনা
এদিকে, লক্ষ্মীপুজোই, তবে একটু অন্যরকম। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিনই বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের রামকানালি গ্রামের মানুষ আরাধনা করেন গজলক্ষ্মীর। হাতির হাত থেকে বাঁচাতে হবে লক্ষ্মীরূপী ফসল! তাই একইসঙ্গে লক্ষ্মী ও গজরাজকে তুষ্ট রাখার চেষ্টা। সেই চেষ্টারই ফল স্বরূপ বাঁকুড়ার রামকানালি গ্রামে ১২৩ বছর ধরে হয়ে আসছে গজলক্ষ্মীর আরাধনা, এমনটাই জানালেন গ্রামবাসীরা।