শুভেনদু ভট্টাচার্য ও মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, কোচবিহার: পুলিশের বাজেয়াপ্ত করা গাঁজার প্যাকেটের মধ্যে রাখা ছিল গ্রেনেড। সেই প্যাকেট রাখা হয়েছিল কোচবিহার আদালতের মালখানায়। পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি গাঁজার প্যাকেট বাজেয়াপ্ত করা হয়।
দিনতিনেক আগে জানা যায়, আদালতের মালখানায় রাখা সেই গাঁজার প্যাকেটের মধ্যে মিলেছে একটি হ্যান্ড গ্রেনেড। তড়িঘড়ি জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়ি থেকে সেনাবাহিনীর বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াডকে আনা হয়। তারা এসে গ্রেনেড নিষ্ক্রিয় করে। পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেনেডটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরিতে তৈরি। গাঁজার প্যাকেটে করে পাচার হচ্ছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সেনার ব্যবহারের গ্রেনেড আদালতের মালখানায় এল কী করে? গাঁজার আড়ালে কি গ্রেনেড পাচার হচ্ছিল? উঠছে প্রশ্ন। আজ গ্রেনেডটিকে নিষ্ক্রিয় করে সেনা। মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
পুলিশের বম্ব স্কোয়াডের কাছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকায়, হ্যান্ড গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করতে ডাকতে হল সেনাবাহিনীকে উদ্ধারের চারদিন পর অবশেষে, রবিবার গোটা এলাকার দখল নিয়ে আদালত চত্বরের মধ্যেই সেটি নিষ্ক্রিয় করল সেনা।
কী জানিয়েছে পুলিশ:
পুলিশের দাবি, ৭ ফেব্রুয়ারি কোচবিহার জেলা আদালতের মালখানা পরিষ্কারের সময় হ্যান্ড গ্রেনেডটি নজরে আসে। অনুমান, এটি ১৫-২০ বছরের পুরনো, তবে সক্রিয় ছিল। একটি জায়গায় উদ্ধার হওয়া গাঁজার প্যাকেট গুলি মালখানায় ডাঁই করে রাখা ছিল। সেখানে গাঁজার প্যাকেটের মঝে রাখা ছিল হ্যান্ড গ্রেনেডটি। আদালতের কাজকর্ম চলার সময় কোনওভাবে যদি, গ্রেনেডটি ফাটত, তাহলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। কারণ যেখানে গ্রেনেডটি পাওয়া যায়, তার ৫০ মিটারের মধ্যেই কোর্ট বসে। প্রতিদিন সেখানে আসেন শয়ে শয়ে মানুষ!! এই অবস্থায় গ্রেনেড উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পুলিশের দাবি, উদ্ধার হওয়া পয়েন্ট থ্রি সিক্স গ্রেড হ্যান্ড গ্রেনেডটি সেনা বাহিনীতে ব্যবহৃত হয়। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বম্ব স্কোয়াডকে। কিন্তু তাদের কাছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকায় খবর যায়, জলপাইগুড়ির বিন্নাগুড়িতে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার রেজিমেন্টে। এরপর রবিবার এসে সেটিকে নিষ্ক্রিয় করা সেনা।
প্রশ্ন উঠছে, আদালতের মালখানায়, সেনা বাহিনীর হ্যান্ড গ্রেনেড কোথা থেকে এল? কী উদ্দেশ্যেই বা আনা হয়েছিল গ্রেনেডটি? গাঁজার আড়ালে গ্রেনেড পাচার করা হচ্ছিল? না কি, বিস্ফোরণ ঘটানোর ছক ছিল?
কোচবিহার জেলা আদালতের তরফে লিখিত অভিযোগ পেয়ে মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।