শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: হাসপাতাল (Hospital) আছে, কিন্তু কার্যত কোনও পরিষেবা নেই! তিন বছর ধরে নেই কোনও চিকিৎসক (Doctor)! কোচবিহারের (Coochbihar) দেওচড়াই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে সরব গ্রামবাসীরা। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক (Political) তরজা। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে। জানিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। 


এক ঝলকে দেখলে মনে হবে, পরিত্যক্ত কোনও বাড়ি। লতাপাতা, আগাছায় ভরে গিয়েছে চারপাশ। এটাই হল কোচবিহারের তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের দেওচড়াই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। 


দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগী ও তাদের পরিবারের অভিযোগ, এখানে হাসপাতাল আছে।  কিন্তু কোনও পরিষেবা নেই। ৩ বছর ধরে কোনও চিকিৎসক নেই দেওচড়াই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ২ জন নার্স ও একজন ফার্মাসিস্ট নিয়ে কোনওমতে চলছে এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। অথচ, দেওচড়াই, বলরামপুর, সন্তোষপুর, কৃষ্ণপুর, পানিশালা সহ বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েক হাজার মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল। 


সেখানকার বাসিন্দা বলেন, "২-৩ বছর হল এখানে কোনও ডাক্তার নেই। একজন সিস্টার ও একজন কমপাউন্ডার থাকেন। পরিষেবা পাচ্ছি না। আগে রাত পর্যন্ত ডাক্তার থাকত। আমাদের সর্বক্ষণের ডাক্তার চাই। 


আরও পড়ুন, টিভি সিরিয়ালের অভিনেত্রীর রহস্যমৃত্যু, পল্লবীর লিভ-ইন-পার্টনারকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ


বোর্ডে জরুরি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা পরিষেবার কথা লেখা থাকলেও, বাস্তবে তা মেলে না বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। তাঁদের বক্তব্য, নমো নমো করে কেবল আউটডোর পরিষেবাটুকু বেঁচে আছে। সেটাও পুরো সময় মেলে না। আরেক বাসিন্দার কথায়, "ডাক্তার নেই তিন বছর। ইমাজেন্সি ইউনিট আছে সেটাও বন্ধ বলা চলে। বেশিরভাগ সময় খোলে না। ১টা বাজতেই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়।" 


বাম জমানায় তৈরি হওয়া বেহাল স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। দেওচড়াই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা অমিল। সিপিএম-তৃণমূল তরজা সিপিএম-এর কোচবিহার জেলা কমিটি সদস্য আকিক হাসান, "সিতাই, তুফানগঞ্জ সহ একাধিক জায়গায় অবস্থা তথৈবচ। কোথাও এক জন কর্মী, কোথাও ডাক্তার নেই বললেই চলে। শূন্যপদ ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। প্রান্তিক মানুষ স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত।" 


কোচবিহারের তৃণমূল সদস্য জেলা কোর কমিটির আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, "৩৪ বছরে কী করেছেন সেই হিসাব আগে দিন। মমতা ব্যানার্জি চেষ্টা করছেন ৫ হাজার ডাক্তার নেওয়ার, কিন্তু পাচ্ছেন ১৫০০। নার্স নেওয়ার চেষ্টাও চলছে। যাঁরা কোনও উন্নয়ন করেননি তাঁরা এই সব বলবেন।" 


এবিষয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, চিকিৎসকের অভাব অনেক জায়গাতেই আছে। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে।