শুভেন্দু ভট্টাচার্য, মাথাভাঙা: কোচবিহারের (Coochbehar) মাথাভাঙায় প্রাথমিক স্কুলের (Primary School) শিক্ষিকাকে অপহরণের অভিযোগে যুব তৃণমূলের এক ব্লক সভাপতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে শিক্ষিকাকেও। শিক্ষিকার পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে একাধিকবার হুমকি দিয়েছিলেন ধৃত শাসকনেতা। যদিও তৃণমূলের দাবি ধৃত আগে যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ছিলেন।
শিক্ষিকাকে অপহরণের অভিযোগ: নিয়োগ দুর্নীতি থেকে গরুপাচারকাণ্ডে তৃণমূলের দুই হেভিওয়েটকে গ্রেফতার করেছে CBI ও ED। যা নিয়ে তোলপাড় চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। আর এই প্রেক্ষাপটেই কোচবিহারে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকাকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। ধৃত মাথাভাঙা ১ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি কামাল হোসেন।গত ২৫ জুলাই স্কুলে গেলেও, বাড়ি ফেরেননি মাথাভাঙার পশ্চিম খাটেরবাড়ি অঞ্চলের প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষিকা। পরের দিন ওই শিক্ষিকার পরিবারের তরফে মাথাভাঙা থানায় মিসিং ডায়েরি করা হয়।কিন্তু বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও কোনও খোঁজ মেলেনি বছর ২৭-এর শিক্ষিকার। এর পরেই নাটকীয় মোড় নেয়, গোটা ঘটনা। কোচবিহারের তৃণমূল সভাপতি অভিজিত্ দে ভৌমিক ও চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মনকে চিঠি লিখে এই শিক্ষিকার বাবা অভিযোগ করেন, কামাল হোসেন তাঁর মেয়েকে অপহরণ করেছে। আগে নানা সময়ে তাঁর মেয়েকে হুমকি দিত অভিযুক্ত। এমনকি মেয়ের অন্যত্র বিয়ে দিলে পরিণাম ভাল হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে তদন্তে নামে মাথাভাঙা থানার পুলিশ। এরপর শুক্রবার সকালে, শিলিগুড়ির একটি হোটেল থেকে অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। সেই হোটেলের ঘর থেকেই উদ্ধার করা হয় শিক্ষিকাকেও। মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত বর্মা বলেন, “অভিযোগ ছিল। সেইমতো পুলিশ গিয়ে গ্রেফতার করেছে। মেয়েটির মেডিক্যাল করা হয়েছে।’’
এই ঘটনায় শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তরজা। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, “তৃণমূল দুর্নীতিতে নিমজ্জিত, সারা বাংলার মানুষ জানে। তৃণমূলের নেতারা এখন অপরহণের সঙ্গেও যুক্ত। শিক্ষিকাকে অপহরণের অভিযোগে তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হয়েছে। এরা বাংলাকে শ্রেষ্ঠ জায়গায় নিয়ে যাবে। পশ্চিমবঙ্গবাসী হিসেবে অন্য প্রদেশের লোকের কাছে মাথা হেঁট হয়ে যায়।’’ কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিত্ দে ভৌমিক বলেন, “বাংলায় পুলিশ যে পক্ষপাতমূলক আচরণ করে না, সেটা প্রমাণ হল। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে গ্রেফতার করার সময় দল দেখা হয়নি। আমরা দলগতভাবেও বসব, ওকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। আগে ব্লক সভাপতি ছিল, এখন নেই।’’ যদিও এদিন কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি ধৃত অভিযুক্ত। ওই শিক্ষিকাকে অপহরণ করা হয়েছিল, না তিনি নিজের ইচ্ছেয়, যুব তৃণমূল নেতার সঙ্গে শিলিগুড়িতে গিয়েছিলেন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: Anubrata Mondal Update: গরুপাচার মামলায় আজ অনুব্রত মণ্ডলকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ