শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার : এবার স্কুলেও থ্রেট কালচারের অভিযোগ উঠল। সেই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ভোটবাড়ি সীতানাথ হাইস্কুলের শিক্ষিকা পাপিয়া রায়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। 


আর জি কর মেডিক্যালে চিকিৎসকের খুন-ধর্ষণের ঘটনার পর, রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজে থ্রেট কালচারের অভিযোগ সামনে এসেছে। এই প্রেক্ষাপটেই এবার স্কুলেও থ্রেট কালচারের অভিযোগ উঠল। সেই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন, কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের ভোটবাড়ি সীতানাথ হাইস্কুলের শিক্ষিকা পাপিয়া রায়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও পরিচালন সমিতির একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।


এ প্রসঙ্গে অভিযোগকারী ও শিক্ষিকা পাপিয়া রায় বলেন, "আমি ১৩ বছর ধরে স্কুলে আছি। মেয়ে হিসাবে সবসময় আতঙ্কিত। যখনই TIC-কে ফেস করছি, পাশ দিয়ে যাচ্ছি আমার অটোমেটিক হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে ভয়ে। কারণ, এই পরিবেশটা আমার স্কুলে কখনো পাইনি।" 


ভোটবাড়ি সীতানাথ হাইস্কুলের শিক্ষিকা পাপিয়া রায়ের দাবি ১৩ বছর ধরে এই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন তিনি। বর্তমানে এই স্কুলে তিনিই একমাত্র মহিলা শিক্ষিকা। তাঁর অভিযোগ, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তাঁকে নানাভাবে হেনস্থা করছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিবস রায় চৌধুরী ও পরিচালন সমিতির একাংশ। এমনকী তাঁকে স্কুলে সবার সামনে অপমানজনক কথা বলা হয় বলেও দাবি করেছেন তিনি।

শিক্ষিকার দাবি, স্কুলের সভাপতি-সহ কমিটিকে এ বিষয়ে অভিযোগ জানানো হলেও কর্ণপাত করেননি তাঁরা। এরপরই ৩০ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন শিক্ষিকা। অভিযোগ জানান জেলার শিক্ষা দফতর ও রাজ্য মহিলা কমিশনেও।


শিক্ষিকা পাপিয়া রায় বলছেন, "নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। আবেদন করেও আমি যখন বারবার বলতে থাকি যে আমাকে রিসিভড কপিটা দিন , তখন উনি আমাকে খুব বাজে একটা ইঙ্গিত করে বলেন যে আপনি ছুটির পর সাড়ে ৪টের পর আমার সঙ্গে অফিসে দেখা করুন। আমি বললাম স্যার, এটা কি আপনি বলতে পারেন ?আমি স্কুলের একমাত্র ফিমেল অ্যাসিস্ট্যান্ট টিচার। এটা আমার ঠিক মনে হচ্ছে না। তখন ৩০ তারিখ বাধ্য হয়ে, মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী , মহিলা কমিশন ও শিক্ষা দফতরে যে অফিসগুলো আছে, স্কুলের সভাপতি এবং কোচবিহার জেলাশাসকের অফিসে আবেদনগুলো ফরওয়ার্ড করি। মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো আবেদনগুলো... ।"


যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিবস রায় চৌধুরী বলেন, "পুরোটাই মিথ্যা। প্রয়োজন হলে প্রত্যেক শিক্ষককে এসে জিজ্ঞাসা করুন। পারিপার্শ্বিক অভিভাবকদের-ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করুন। আমার মুখ থেকে যদি কোনও খারাপ ভাষা বেরিয়ে থাকে বা কেউ যদি বলেন যে খারাপ কথা বলছেন, আমি সর্বসম্মুখে ক্ষমা চাইব।"

এ বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সমরচন্দ্র মণ্ডল জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। অভিযোগ হাতে পাওয়ার পর খতিয়ে দেখবেন।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।