শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: কোচ রাজাদের ইতিহাস আরও একবার পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি উঠল।  কোচবিহারের রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের মৃত্যুবার্ষিকীতে আজ এই দাবিতে সুর চড়াল বিজেপি। তৃণমূলের পাল্টা জবাব, এই নিয়ে রাজনীতি করছে গেরুয়া শিবির।


কোচবিহার রাজবাড়ি থেকে ঐতিহ্যশালী মদনমোহন মন্দির, স্থাপত্য থেকে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি, সবেতেই জড়িয়ে রাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের নাম। কোচবিহার শহরের রূপকার রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের মৃত্যুবার্ষিকীতে আরও একবার সামনে এল, কোচ রাজাদের ৪৫০ বছরের ইতিহাস পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তের দাবি।


শনিবার সাগরদিঘি চত্বরে, মহারাজার মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানায় একাধিক সংগঠন।কোচবিহার রাজ ফ্যামিলি সাকসেসার ওয়ালেফয়ার ট্রাস্টের মুখপাত্র মৃদুল নারায়ণ বলেছেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি কোচবিহারের ঐতিহ্যশালী ইতিহাস যেন পাঠ্যপুস্তকে থাকে, রাজ্য সরকারকে জানিয়েছে যাতে এই দাবি পূরণ হয়। কোচবিহারের যারা মহারাজাকে ভালবাসেন, তাঁরাও এই দাবি জানিয়েছেন।


রাজার প্রয়াণ দিবসের অনুষ্ঠানে আলাদা আলাদাভাবে হাজির ছিলেন দুই বিজেপি বিধায়ক ও তৃণমূলের জেলা সভাপতি ও প্রাক্তন সাংসদ। কোচবিহারের ইতিহাস পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তির দাবি ঘিরে, শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।


 কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেছেন, কোচবিহারের ইতিহাস কোনও পাঠ্যবইয়ে নেই, বাম বা তৃণমূল কোনও জমানায় আসেনি, আমরা বিধানসভায় বিষয়টি তুলব।


তৃণমূল নেতা ও  কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বলেছেন, বিজেপি কিছুই জানে না, পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোচবিহারের ইতিহাস পড়ানো হয়। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি।  সমস্ত ঐতিহ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। এটা বিজেপির দ্বিচারিতা।


১৯৪৯-এর ২৮ অগাস্টের আগে পর্যন্ত কোচবিহারে ছিল রাজার শাসন। ৪৯-এর ২৮ অগাস্ট এক চুক্তির মাধ্যমে রাজ্যের পূর্ণাঙ্গ শাসনক্ষমতা ভারত সরকারের হাতে তুলে দেন কোচবিহারের তৎকালীন রাজা জগদীপেন্দ্র নারায়ণ। ১৯১১ সালে ৪৯ বছরে প্রয়াত হন রাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণ।১৯৫০ সালের ১৯ জানুয়ারি, পশ্চিমবঙ্গের জেলা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয় কোচবিহার।


রাজার মৃত্যুর পর এক শতাব্দী পরও কোচবিহারের ইতিহাস সিলেবাসে আনার দাবি ঘিরে থামছে না দড়ি টানাটানি।