দিনহাটা : হিংসা যেন থামার লক্ষণ নেই। ভোট মিটে গেলও অব্যাহত ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস। উত্তেজনা সেই কোচবিহারের দিনহাটায়। এবার ভেটাগুড়িতে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীর বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে।
দিনহাটা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী রাজীব বর্মন বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। তৃণমূল প্রার্থীর অভিযোগ, গতকাল রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বাড়ির বাইরে সিসি ক্যামেরা ভেঙে দিয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। ভেঙে দেওয়া হয় বাড়ির চারপাশে টিনের দেওয়াল। তৃণমূলের অভিযোগ, হামলার নেপথ্যে বিজেপির হাত রয়েছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির।
স্বজন হারানোর বেদনা। সন্তানহারা মায়ের কান্না। পঞ্চায়েত ভোটের দিন বেলাগাম সন্ত্রাস। অশান্তি হয়েছিল কোচবিহারের দিনহাটা থেকে তুফানগঞ্জে। ওই রাতেই বাড়ি ছেড়ে প্রতিবেশী রাজ্য অসমে আশ্রয় নেন বিজেপির কয়েকশো কর্মী-সমর্থক এবং প্রার্থী। প্রাণ বাঁচাতে অসমে গা ঢাকা দেন সিপিএমের কয়েকজন কর্মী-প্রার্থী এবং প্রাক্তন বিধায়কও।
অসমের রানপাগলি গ্রামে একটি ক্যাম্পে ছিলেন বিজেপির সমর্থকরা। আর, অসমের এক কংগ্রেসের বিধায়কের তত্ত্বাবধানে অন্য একটি ক্যাম্পে ছিলেন সিপিএমের সমর্থকরা। এই খবরে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হওয়ায়, ৫দিন পর, বিজেপি এবং সিপিএমের সেই কর্মী ও প্রার্থীদের ফেরায় কোচবিহার পুলিশ।
ভোট ঘোষণার পর থেকেই বার বার অশান্তি হয়েছে কোচবিহারে। রক্ত ঝরেছে। বোমাবাজি হয়েছে। মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। অভিযোগ ওঠে, অশান্তির আবহে ভোটের দিনও বিজেপি এবং সিপিএমের প্রার্থী এবং কর্মীদের কয়েকজন চলে যান অসমে। পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণার দিন, একথা ট্যুইট করে জানান অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণার পরের দিন, নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে, বাসে করে তাঁদের ফিরিয়ে আনে কোচবিহার পুলিশ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় ঘরছাড়াদের ফিরিয়ে আনা হয়। ঘরে ফিরলেও, আতঙ্ক তাড়া করছে এই মানুষগুলোকে। এই আবহেই ফের অশান্তির ছবি ধরা পড়ল কোচবিহারের দিনহাটায়। তবে, এবার যেন উলট-পুরাণ। কাঠগড়ায় বিজেপি।
তবে, ভোট ঘিরে অন্য ছবিও দেখা গেছে। গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে উঠেছে অন্য অভিযোগও। গণনার আগের দিন নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে স্ট্রং রুমে ঢুকে পড়ার অভিযোগ উঠেছিল। কর্তব্যরত আধিকারিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও মারধরেরও অভিযোগ ওঠে। দিনকয়েক আগে অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ষড়ষন্ত্রের অভিযোগে সরব হয় বিজেপি। বিজেপি নেতাকে অসম-বাংলা সীমানা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ ওঠে, দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের দিনহাটা হাইস্কুলের স্ট্রং রুমে নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে জোর করে ঢুকে পড়েন দিনহাটা শহরের মণ্ডল সভাপতি অজয় রায়।