সনৎ ঝা, দার্জিলিং: কালীপুজোর দিন অশোক ভট্টাচার্যর বাড়িতে গেলেন দুই বিজেপি নেতা। গতকাল শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়রের সঙ্গে দেখা করেন দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্ত ও শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সাক্ষাতের ছবি সোশাল মিডিয়ায় পোস্টও করেন বিজেপি সাংসদ। দীপাবলির সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে ফেসবুকে দাবি করেছেন রাজু বিস্ত। স্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকীতে আমন্ত্রণ জানানোয় দেখা করতে এসেছিলেন, প্রতিক্রিয়া অশোক ভট্টাচার্যর। বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস যড়যন্ত্র করছে, আক্রমণ কুণাল ঘোষের। 



উৎসবের আবহে, বঙ্গ রাজনীতিতে হঠাৎ চমক! এক ছাদের তলায় যুযুধান দুই পক্ষ। মাঝে সিপিএম নেতা ও শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ও তাঁর দুই পাশে রয়েছেন বিজেপির দুই জন প্রতিনিধি। ডানদিকে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত। আর অশোক ভট্টাচার্যর বাঁ দিকে বসে, তাঁর একসময়ের দলীয় সতীর্থ, বর্তমানে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এই ছবিকে কেন্দ্রে করেই সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতি! সোমবার কালীপুজোর সন্ধেয়, অশোক ভট্টাচার্যর শিলিগুড়ির বাড়িতে যান রাজু বিস্ত, শঙ্কর ঘোষ ও বিজেপির কয়েকজন নেতানেত্রী। ছবিতে সবাইকেই বেশ খোলামেলা আলোচনা করতেই দেখা যাচ্ছে।


এই ছবি ট্যুইট করেছেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত। দার্জিলিং-এর বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তের কথায়, 'আমার এটাই বলার আছে যে, খারাপ কাজ করা। এটা শুধু রাজনীতি হয়। আর নিজের দল ছাড়াও অন্য দলের অনেক জ্ঞানী লোক থাকে। আমি মনে করি, যখনই অশোকদার সঙ্গে দেখা করি, অনেক নতুন তথ্য বিশেষ করে, পশ্চিমবঙ্গ-শিলিগুড়ি সম্পর্কে জানতে পারি। ৩০ অক্টোবর ওনার স্ত্রীর মৃত্যু বার্ষিকী। আমি আসতে পারব না, তাই দেখা করতে এসেছিলাম'।


তৃণমূল অবশ্য এই সাক্ষাৎকে শুধুই সৌজন্য হিসেবে দেখতে নারাজ। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কথায়, গতকাল শিলিগুড়িতে বিজেপি এবং সিপিএমের যে বৈঠক হয়েছে, তাতে আরও বেশি করে প্রমাণিত হয়ে গেছে, অন্ধ তৃণমূল বিরোধিতা থেকে বিজেপি সিপিএম কংগ্রেস এ রাজ্যে কীভাবে চলছে। ব্যক্তিগত সৌজন্য, দুর্ঘটনায় সমবেদনা, বিজয়া ইত্যাদি। কিন্তু অন্দরমহলের সূত্র বলছে, বিজেপি যে উত্তরবঙ্গকে ভাঙার চক্রান্ত করছে, পাশাপাশি ডিসেম্বর ডিসেম্বর বলে কিছুই করতে পারবে না, উত্তরবঙ্গে সেই সব বিষয়ে সাহায্য চাইতেই নাকি অশোকবাবুর কাছে এনারা গেছিলেন।


রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়,তৃণমূলের মুর্খামি ছাড়া কিছু নয়। অশোক ভট্টাচার্য বাড়িতে এর আগে আমি, দিলীপ দা গেছিলাম। উনি বর্ষীয়ান নেতা, বিধায়ক,মন্ত্রী ছিলেন। সেখানে বিজেপির নেতারা যদি সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান, সেখানে বিতর্কের কী আছে? তৃণমূলের এখন অবস্থা, চুরি রুখতে যেখানে যা দেখছে সেখানেই বিতর্ক দেখছে।


এ বছর, প্রথমবারের জন্য শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ বামেদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। এই প্রেক্ষাপটে পঞ্চায়েত ভোটের আগে, সিপিএম ও বিজেপি নেতাদের বৈঠক কি স্রেফ সৌজন্য? তার নেপথ্যে রয়েছে অন্য সমীকরণ? তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিস্তর জল্পনা।