ঝিলম করঞ্জাই ও সন্দীপ সরকার, কলকাতা: রাজ্যে (West Bengal) গত ৭ দিনে ২৫২ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে (Hospital) ভর্তির সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনই বাড়ছে ICU বেডের চাহিদা। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে একই অবস্থা। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিত্সকদের একাংশ।
রাজ্যে করোনার (Coronavirus) সংক্রমণ খানিকটা কমলেও, দৈনিক মৃতের সংখ্যা ঘিরে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। এক সপ্তাহ ধরে রাজ্যে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ৩০-এর ওপরেই রয়েছে। শেষ ৭ দিনে রাজ্যে ২৫২ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। আর এই অবস্থায় বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও। একইসঙ্গে চাপ বাড়ছে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ICU বেডের ওপরেও।
এই আবহে চিকিত্সক সৌগত ঘোষ বলেন, "ওমিক্রনে আক্রান্ত অনেক, তার একটা অংশ কোমরবিডিটি থাকতে পারে, অবস্থার অবনতি হতে পারে। তাঁদেরই মৃত্যু হয়েছে। সেই চিত্রটাই দেখতে পাচ্ছি। ইংল্যান্ড, আমেরিকা, দিল্লি মুম্বই সব জায়গায় একই চিত্র। সবার ক্ষেত্রে ওমিক্রন মৃদু নাও হতে পারে। ৬০ বেশিরাই আইসিইউতে যাচ্ছেন।"
এই পরিস্থিতিতে দেখা দিচ্ছে ICU বেড সঙ্কটের আশঙ্কাও। এম আর বাঙুর হাসপাতালে ৭৮টি ICU বেডের মধ্যে রোগী ভর্তি রয়েছে ৬৬টিতে। বেলেঘাটা আইডির ৩৩টি ICU বেডের মধ্যে রোগী রয়েছে ২০টিতে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও ২৫টি ICU বেডে রোগী ভর্তি রয়েথেন। এখানে ৮০টি ICU বেড রয়েছে।
বেসরকারি হাসপাতালগুলির ছবিটাও আলাদা নয়। আমরি হাসপাতালের তিনটি শাখার ১৩৩টি কোভিড ICU বেডের ১২২টিই ভর্তি। পিয়ারলেস হাসপাতালের ১১টি বেডের ৮টিই ভর্তি। অ্যাপোলো হাসপাতালের ৩০টি ICU বেডই ভর্তি। একই অবস্থা মেডিকারও। (৫৫) ফর্টিস(৩০) ও উডল্যান্ডস হাসপাতালের(১৫) কোনও কোভিড ICU বেড ফাঁকা নেই।
চিকিত্সক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "সংখ্যায় মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, তার ১০ শতাংশ গুরুতর হলেই বেড পাওয়া যাবে না। এমন ইনফেকশন আগে দেখিনি।" চিকিত্সকদের দাবি, আক্রান্তদের অধিকাংশেরই মৃদু উপসর্গ থাকলেও, বয়স্ক ও কোমর্বিডিটি থাকাদের ক্ষেত্রে অনেকসময় জটিল আকার ধারণ করছে।
শল্য চিকিত্সক প্রদীপ নিমানীর কথায়, "কোভিডে ওমিক্রনে আক্রান্ত অনেক বেশি হচ্ছে। বয়স্করাও আক্রান্ত হচ্ছে। বহু কোমরবিডিটি থাকছে। হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। আইসিইউ বেডে চাপ বাড়ছে।মৃত্যুও হচ্ছে।" একইসঙ্গে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা আগের তুলনায় সামান্য বেড়েছে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ মিহির সরকার বলেন, "চিকিত্সকরা বলছেন, দৈনিক সংক্রমণ খানিকটা হ্রাস পেলেও, করোনার বিধিনিষেধ পালনে বিন্দুমাত্র শিথিলতা দেখানোর জায়গা নেই। "