উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, শিবাশিস মৌলিক ও সুদীপ চক্রবর্তী, কলকাতা : কালিয়াগঞ্জের সভা থেকে ফের 'নো ভোট টু মমতা' স্লোগান তুললেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। অন্য়দিকে, সিপিএম (CPM) সূত্রে খবর, রাজ্য় কমিটির বৈঠকে একাধিক জেলা কমিটি আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, যে বিজেপির তোলা এই স্লোগান বাম ভোটে ভাঙন ধরাতে পারে। পাল্টা কৌশল হিসেবে 'মানুষের পঞ্চায়েত' গড়ার ডাক দিয়ে ভোটে ঝাঁপাতে চাইছে সিপিএম।


পঞ্চায়েত ভোটের আগে 'NO VOTE TO MAMATA' স্লোগানে শান দিচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু, এই স্লোগানই চিন্তা বাড়াচ্ছে বাম শিবিরের। তাদের অনুমান, এই স্লোগান, তৃণমূলের বিরুদ্ধে গেলেও বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেবে বিজেপিকে। বুধবার, আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের রাজ্য় কমিটির বৈঠকে এনিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন জেলা কমিটির অধিকাংশ সদস্য়।

তাঁদের, বক্তব্য়, রাজ্য়ে RSS-এর উপস্থিতি অত্য়ন্ত সক্রিয়। তারাই, 'NO VOTE TO MAMATA' - স্লোগানটিকে বিজেপির মাধ্য়মে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এই স্লোগান যত জনপ্রিয় হচ্ছে, ততই চাপ তৈরি হচ্ছে সিপিএমের ওপর। কারণ, মমতা-বিরোধী একটা বড় অংশের কাছে এই স্লোগানের বাড়তি গুরুত্ব তৈরি হচ্ছে। যা মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়ছে সিপিএমের কাছে।

এই পরিস্থিতিতে স্ট্য়াটেজি বদলের পথে হাঁটছে বামেরা। কৌশল হিসেবে 'মানুষের পঞ্চায়েত' গড়ার ডাক দিয়ে ভোটে ঝাঁপাতে চাইছে সিপিএম। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, এর আগে একটা স্লোগান ছিল- নো ভোট টু বিজেপি। তাতে লাভ হয় তৃণমূলের। আমাদের স্লোগান - নো ভোট টু মমতা, নো ভোট টু বিজেপি। কারণ একে অপরের পরিপূরক এবং পজিটিভ ওয়েতে মানুষের পঞ্চায়েত। নিচুতলার কর্মীদের বোঝাচ্ছি। সামাজিক সংগঠনে আরএসএস-এর গুরুত্ব বৃদ্ধি এটা স্বীকার করছে। আরএসসকে মোকাবিলা করা সেটা বড় চ্য়ালেঞ্জ।

যদিও এনিয়ে শুভেন্দু বলেন, ২ লক্ষ কোটি ঋণের বোঝা রেখে যায় সিপিএম। পিসিমণি তা বাড়িয়ে ৬ কোটি করেছে। আপনারা আর সিপিএমকে ভোট দেবেন ?

আগামী পঞ্চায়েত ভোটে জোটবদ্ধ হওয়া নিয়েও এদিন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয় সিপিএমের বৈঠকে। এক্ষেত্রে তাদের বক্তব্য় স্পষ্ট। তৃণমূল ও বিজেপি ছাড়া সমস্ত রাজনৈতিক দলকে সঙ্ঘবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছে সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, আমরা কোনও মহাজোট নই। তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী সব শক্তিকে এক করব। কংগ্রেস, SUCI, ISF...তৃণমূল বিজেপি বাদ দিয়ে বিকল্প লড়াই। এটাই কৌশল।

সিপিএম সূত্রে দাবি, ৭০ শতাংশ আসন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। বাকি, ৩০ শতাংশের কাজ এই সপ্তাহেই শেষ হয়ে যাবে।