পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: অ্যাপের মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা! মূল চক্রী দুবাই থেকে দেশে ফিরতেই গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) সাইবার শাখা। ধৃতকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় আনা হবে। আন্তর্জাতিক ঋণ-প্রতারণাচক্রে মোট কতজন জড়িত, তদন্তে লালবাজার। ই-নাগেটস মোবাইল গেমিং অ্যাপ প্রতারণাকাণ্ডের পর আর একটি প্রতারণার ঘটনায় প্রকাশ্যে এল দুবাই যোগ। 


সহজে ঋণের টোপ: অ্যাপ ডাউনলোডের অছিলায় ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে ব্ল্যাকমেল। দুবাইয়ে বসে ভারতে কোটি কোটি টাকার জালিয়াতি! ঋণ অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণার মাস্টারমাইন্ডকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। ধৃত সনিয়া খারাতমল মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা হলেও, মাস ছয়েক ধরে দুবাইতে ছিলেন।


পুলিশ সূত্রে দাবি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সবচেয়ে জনবহুল শহরে বসে ভারতে প্রতারণার বিশাল কারবার ফেঁদেছিলেন সনিয়া। কীভাবে অপারেশন চালাতেন তরুণী?পুলিশ সূত্রে খবর,সহজে ঋণের টোপ দিয়ে মোবাইল ফোনে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হত। ওই অ্যাপ ডাউনলোড করলেই মোবাইল ফোন থেকে হাতিয়ে নেওয়া হত যাবতীয় তথ্য। 


তারপর মোটা টাকা চেয়ে চলত ব্ল্যাকমেল। টাকা না দিলে, ছবি বিকৃত করে, সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে বদনাম করার হুমকি দেওয়া হত। পুলিশ সূত্রে দাবি, এভাবেই কয়েক মাসে কোটি কোটি টাকা আদায় করেছিলেন এই তরুণী। 


সনিয়া খারাতমলের নামে আগেই লুকআউট নোটিস জারি হয়েছিল। গত ২৭ জুন লালবাজারে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। 


বৃহস্পতিবার বোনের বিয়েতে যোগ দিতে দুবাই থেকে মুম্বই পৌঁছতেই, কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখা তাকে গ্রেফতার করে। 


সম্প্রতি ই-নাগেটস মোবাইল গেমিং অ্যাপ প্রতারণাকাণ্ডেও দুবাই যোগ সামনে আসে। সুদূর দুবাইয়ে বসে রোবোটিক সিস্টেমের মাধ্যমে কীভাবে সল্টলেকে আর্থিক প্রতারণার অফিস চালানো হত, গার্ডেনরিচের ব্যবসায়ী আমির খান ও তাঁর শাগরেদদের জেরা করে জানতে পারেন গোয়েন্দারা। এবার দুবাইয়ে বসে অপারেশন চালানো ঋণ-প্রতারককে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। 


 ১০ লক্ষ টাকা প্রতারণা: এই একই দিনে আরও একটি প্রতারণার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। ব্যাঙ্কের এসএমএস অ্যালার্টের নম্বর পরিবর্তন করে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠল। সল্টলেকের এ কে ব্লকের বাসিন্দার অভিযোগ, তিনি মেল মারফত জানতে পারে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৯লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়েছে।


অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে নৈহাটি থেকে একজনকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম বিভাগ। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগকারীর অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ফোন নম্বর ব্যবহার করে সেই টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। যাঁর নামের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়েছে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, সেই অ্যাকাউন্ট অন্য একজন ব্যবহার করেন। সেই সূত্র ধরে নৈহাটি থেকে ধানবাদের এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চক্রে আর কারা জড়িত, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।