আশাবুল হোসেন, কলকাতা : প্রবল ঝড়ের সঙ্গে চলছে তুমুল বৃষ্টি। বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে পড়েছে গাছ, উড়েছে টিনের চাল। 'দানা'র দাপট বাংলাতেও। পূর্ব মেদিনীপুরে বহু জায়গায় ভেঙে পড়েছে গাছ। জলোচ্ছ্বাসে মন্দারমণির নিচু জমিতে ঢুকেছে নোনা জল। ঝড়ের দাপট বকখালিতেও। কলকাতাতেও কালো মেঘে ঢাকা আকাশ, চলছে বৃষ্টি। এই পরিস্থিতিতে নবান্ন থেকে পুরসভা-লালবাজারে কন্ট্রোলরুম থেকে চলছে নজরদারি। রাতের পর সকালেও নবান্ন থেকে নজরদারি মুখ্যমন্ত্রীর। পুরসভা থেকে নজরদারিতে মেয়র। রাতে বিদ্যুৎভবনেই অরূপ বিশ্বাস।


নবান্ন থেকে অনবরত নজরদারি চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছুক্ষণ আগে ৭টি জেলার জেলাশাসকের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। জেলাগুলি হল- পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়া। জেলাশাসকরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, পূর্ব মেদিনীপুরের অবস্থা সবথেকে খারাপ। দিঘায় প্রবল ঝড়-বৃষ্টি, সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। একই অবস্থা মন্দারমণি এবং তাজপুরে। মন্দারমণিতে নিচু এলাকায় প্রচুর পরিমাণে নোনো জল ঢুকে গিয়েছে। ঝড়ের দাপটে প্রচুর গাছপালা পড়েছে। অন্যদিকে, বকখালিতেও প্রবল জলোচ্ছ্বাস, বৃষ্টি হচ্ছে। হিঙ্গলগঞ্জ, টাকি, গোসাবা, সাগর, নামখানা ...এইসব জায়গাতেও প্রায় একই রকম অবস্থা। বনগাঁয় বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আগেই সেখানে বিভিন্ন এলাকায় জল জমে ছিল। সেখানে নতুন করে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বহু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এই মুহূর্তে পরিষ্কার করে বলা সম্ভব নয়। যত বেলা বাড়বে অ্য়াসেসমেন্ট হবে। তারপরে সরকারের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে, ইতিমধ্যেই ২ লক্ষ ১১ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন। ১ হাজার ২২৭টি ত্রাণ শিবির সরকারের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে। যেসব এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে, সেখানে অস্থায়ীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।  


দিঘার পরিস্থিতি-


ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া এখনও এক থেকে দুই ঘণ্টা চলবে। যে কারণে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব এখনও পর্যন্ত রয়েছে দিঘার সৈকত এলাকায়। গতকাল রাত থেকে আজ ভোর পর্যন্ত সমুদ্রের রুদ্র রূপ দেখা যায়। তবে, আজ সেই অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হলেও, ঝোড়ো হাওয়া বইছে। সমুদ্র উত্তাল অবস্থায় রয়েছে। মেঘ কালো। গতকাল ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শুরু হতেই মুষলধারায় বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। তার সঙ্গে ঘূর্ণি ঝড়। রাতে ২টো নাগাদ বেড়ে যায় সমুদ্রের জলোস্তর। যার জেরে গার্ডওয়াল টপকে চলে আসে ঢেউ।