সমীরণ পাল ও ঐশী মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার মুখে। ঘূর্ণিঝড় 'দানা'-র প্রভাব থেকে বাঁচতে দীর্ঘ সময় বন্ধ ছিল ট্রেন চলাচল। অবশেষে শিয়ালদা দক্ষিণ শাখায় চালু হল লোকাল ট্রেন।


গতকাল রাত ৮টা থেকে 'দানা'-র কারণে শিয়ালদা দক্ষিণ শাখার ট্রেন বন্ধ ছিল। পূর্ব নির্ধারিত সময় মেনেই সকাল ১০টা থেকে শুরু হল ট্রেন চলাচল। দক্ষিণ শাখার প্রথম ট্রেন ডাউন সোনারপুর লোকাল শিয়ালদা স্টেশন ছাড়ে। তারপর একে একে রয়েছে ডায়মন্ড হারবার, ক্যানিং, বারুইপুর এবং লক্ষ্মীকান্তপুর লোকাল ট্রেন। 


ট্রেন বন্ধ থাকায় অনেক রাত থেকে শিয়ালদা স্টেশন অপেক্ষা করছিলেন যাত্রীরা। এরপর সময়ের কিছু আগে অনেকেই টিকিট কাউন্টারের কাছে জমায়েত শুরু করেন। যাতে কাউন্টার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই টিকিট পাওয়া যায়। কিন্তু, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হওয়ায় অনেকেই ধৈর্য্যচ্যুত হয়ে পড়েন। টিকিট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন পড়ে যায় যাত্রীদের।


এদিকে কলকাতা বিমানবন্দরে শুরু হল বিমান পরিষেবা। তবে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বাতিল হয়েছে বহু উড়ান। তার জেরে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে যাত্রীদের।


বাংলায় 'দানা'


প্রবল ঝড়ের সঙ্গে চলছে তুমুল বৃষ্টি। বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে পড়েছে গাছ, উড়েছে টিনের চাল। 'দানা'র দাপট বাংলাতেও। পূর্ব মেদিনীপুরে বহু জায়গায় ভেঙে পড়েছে গাছ। জলোচ্ছ্বাসে মন্দারমণির নিচু জমিতে ঢুকেছে নোনা জল। ঝড়ের দাপট বকখালিতেও। কলকাতাতেও কালো মেঘে ঢাকা আকাশ, চলছে বৃষ্টি। এই পরিস্থিতিতে নবান্ন থেকে পুরসভা-লালবাজারে কন্ট্রোলরুম থেকে চলছে নজরদারি। রাতের পর সকালেও নবান্ন থেকে নজরদারি মুখ্যমন্ত্রীর। পুরসভা থেকে নজরদারিতে মেয়র। রাতে বিদ্যুৎভবনেই অরূপ বিশ্বাস।


নবান্ন থেকে অনবরত নজরদারি চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছুক্ষণ আগে ৭টি জেলার জেলাশাসকের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। জেলাগুলি হল- পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়া। জেলাশাসকরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, পূর্ব মেদিনীপুরের অবস্থা সবথেকে খারাপ। দিঘায় প্রবল ঝড়-বৃষ্টি, সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। একই অবস্থা মন্দারমণি এবং তাজপুরে। মন্দারমণিতে নিচু এলাকায় প্রচুর পরিমাণে নোনো জল ঢুকে গিয়েছে। ঝড়ের দাপটে প্রচুর গাছপালা পড়েছে।


অন্যদিকে, বকখালিতেও প্রবল জলোচ্ছ্বাস, বৃষ্টি হচ্ছে। হিঙ্গলগঞ্জ, টাকি, গোসাবা, সাগর, নামখানা ...এইসব জায়গাতেও প্রায় একই রকম অবস্থা। বনগাঁয় বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আগেই সেখানে বিভিন্ন এলাকায় জল জমে ছিল। সেখানে নতুন করে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বহু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে।