জয়দীপ হালদার, সাগর: ঘূর্ণিঝড় ‘জওয়াদ’ স্থলভাগে আছড়ে পড়ার আগেই শক্তি হারাবে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তবে সতর্ক রাজ্য প্রশাসন। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে আলাদা করে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপের সমুদ্রতটে পর্যটকদের জলে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। স্পিডবোটের মাধ্যমে মাইকে প্রচার করে পুলিশ আধিকারিকরা পর্যটকদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দেওয়ার কাজ চালাচ্ছেন। পাশাপাশি নদী এবং সমুদ্র উপকূলেও কড়া নজরদারি চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য নদী এবং সমুদ্রে কোনওরকম জলযান, মাছ ধরার ট্রলার বা কোনও মানুষ যেন না থাকে। এছাড়াও সুন্দরবন উপকূল এলাকার বিভিন্ন দ্বীপের ফ্রি পরিষেবার উপরেও কড়া নজর রাখছে জেলা প্রশাসন।
এদিকে, ক্রমশঃ এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘জওয়াদ’। বর্তমানে বিশাখাপত্তনম থেকে ২২০ কিলোমিটার, পুরী থেকে ৪০০ কিলোমিটার এবং পারাদ্বীপ থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড়। আজ সকালের মধ্যেই উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও দক্ষিণ ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারে ‘জওয়াদ’। তারপর আরও কিছুটা উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে ওড়িশা উপকূল বরাবর সরে আগামীকাল দুপুর নাগাদ পুরী উপকূলের কাছে পৌঁছবে। এরপর ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ বাংলার দিকে হলেও, আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, জওয়াদের স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই। পুরীর কাছে পৌঁছেই শক্তি হারাবে ঘূর্ণিঝড়। বাংলায় ঢোকার আগে তা পরিণত হবে নিম্নচাপে। সেই নিম্নচাপ সুন্দরবনের উপর দিয়ে বাংলাদেশে চলে যাবে।
তবে এর প্রভাবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় আজ থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হবে দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া ও হুগলিতে। আগামীকাল কলকাতাতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সমুদ্র উত্তাল থাকায় মৎস্যজীবীদের জন্য জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
সকাল থেকে দিঘায় শুরু হয়েছে হালকা বৃষ্টি। সমুদ্র কিছুটা উত্তাল হলেও জল এখনও গার্ডওয়াল টপকে যায়নি। আগেভাগেই পর্যটকদের সমুদ্রে নামায় জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন। হুইসল বাজিয়ে সতর্ক করছে পুলিশ।
বকখালিতেও সকাল থেকে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। তার মধ্যেই পর্যটকদের ভিড় চোখে পড়েছে। তাঁদের সরিয়ে দেন পুলিশকর্মীরা।