কলকাতা: আবারও ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়। রবিবার রাতেই ঘূর্ণিঝড় রেমাল স্থলভাগে আছড়ে পড়বে বলে জানা গিয়েছে। গত কয়েক বছরে এই নিয়ে পঞ্চম বার মে মাসে দুর্যোগের খাঁড়া নেমে আসছে পশ্চিমবঙ্গের উপর। এর আগে, ২০০৯ সালে আয়লা, ২০১৯ সালে ফণী (এপ্রিল-মে), ২০২০ সালে আমফান এবং ২০২১ সালে ইয়াস, মে মাসেই একের পর এক ঘূর্ণিঝড় নেমে আসে। এবারও মে মাসেই ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রকোপ নেমে আসতে চলেছে। (Cyclone Remal)


আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রবিবার মধ্যরাতে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। রবি থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। শহর কলকাতা থেকে জেলাগুলিতে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া এবং কোথাও ভারী, কোথাও আবার অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। একাধিক জেলায় ইতিমধ্যেই কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। (Cyclone Remal Updates)


এর আগে, ২০০৯ সালের ২৫ মে রাজ্যে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় আয়লা, যার সর্বোচ্চ গতি ছিল ১২০ কিলোমিটার। ২০২১ সালের ২৬ মে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস, যার সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৪০ কিলোমিটার ছিল। আমফান সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়, বঙ্গীয় ব-দ্বীপে আছড়ে পড়া সবচেয়ে তীব্র গতির ঘূর্ণিঝড় এখনও পর্যন্ত সেটিই। ২০২০ সালের ২০ মে আমফান আছড়ে পড়ে। এই তিন ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপেই সুন্দরবনের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০১৯ সালে ফণীর প্রকোপে ওড়িশায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, বাংলাতেও তার প্রভাব পড়ে। 


আরও পড়ুন: Cyclone Remal Landfall: আজ রাতেই আছড়ে পড়বে রেমাল, কলকাতা-সহ আর কোন জেলায় দুর্যোগের সম্ভাবনা জানুন


কিন্তু বেশির ভাগ ঘূর্ণিঝড় মে মাসেই কেন আঘাত হানে? আবহবিদরা জানিয়েছেন, বর্ষার আগে (এপ্রিল-জুন) এবং বর্ষার পর (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ভারত মহাসাগরের উত্তরের অংশ স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে। এই সময় যে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়, তার ক্ষমতা অন্য ঘূর্ণিঝড়ের থেকে বেশি হয়। কারণ এই সময় সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে। এর ফলে নিম্নচাপ দ্রুত ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।  বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে বর্তমান তাপমাত্রা এই মুহূর্তে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর রয়েছে।


এক দিকে উচ্চ তাপমাত্রা, অন্য দিকে, অনুকুল বাতাস, দুইয়ে ভর করেই ঘূর্ণিঝড় রেমালের শক্তিবৃদ্ধি ঘটেছে। পূর্ণশক্তিতে সেটি আছড়ে পড়লে এবারও সুন্দরবনের প্রভূত ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন আবহবিদরা। কলকাতা বন্দরের পরিসংখ্যান বলছে, রবিবার রাত ১১টা নাগাদ জোয়ারের সম্ভাবনা রয়েছে, সেই সময় ঢেউয়ের উচ্চতা ৫ মিটার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। ওই সময়ের আশেপাশে রেমাল আছড়ে পড়লে ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়তে পারে আশঙ্কা।