কলকাতা: বকেয়া ডিএ-র (DA) দাবিতে ২৭২ দিনে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ধর্না। কালীপুজোর পর লাগাতার কর্মসূচির হুঁশিয়ারি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। সংগঠনের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'লোকসভা ভোটের মুখে প্রয়োজনে লাগাতার ধর্মঘটের রাস্তাতেও যেতে পারি।'


 রাজ্য সরকারি কর্মীদের ধর্না: একদিকে উৎসবের শেষ হয়েও, শেষ হয়নি। রেড রোডে কার্নিভালের প্রস্তুতি চলছে। জাঁকজমক থেকে জৌলুস কোনও কিছুরই খামতি নেই। অন্যদিকে, নিজেদের দাবিতে এখনও পথেই তাঁরা। এদিন ভাস্কর ঘোষ বলেন, "মাননীয়া মুখ্য়মন্ত্রী বিজয়ার শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন। কর্মচারীদের অধিকার রক্ষার থেকে যে সরকার দান-ধ্য়ানকে প্রাধান্য় দেয় বেশি, বা যুব সমাজের অধিকার রক্ষার থেকে যে সরকার অন্য়ান্য় জায়গায় টাকা খরচা করে, সেগুলোকে নষ্ট করার দিকে মনোযোগ বেশি থাকে। সেই সরকারের শুভেচ্ছা বার্তাকে প্রহসন ছাড়া আর কিছু মনে করছি না। লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে, আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়বে। দরকার হলে, লোকসভা ভোটের মুখে লাগাতার ধর্মঘটে যেতে পারি।''


গত ২৭২ দিন ধরে রাস্তায় দিন কাটাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। বকেয়া ডিএ-র দাবিতে একাধিকবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন তাঁরা। এমনকী বিধানসভা অভিযানের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীর। কিন্তু এত কিছুর পরেও সরকারের টনক নড়েনি বলে অভিযোগ তাঁদের। কেটে গিয়েছে উৎসবের দিনগুলিও। তবে ছবিটা সেই একই রয়েছে। চলতি মাসেই কর্মবিরতির পথে হেঁটেছিলেন তাঁরা। বকেয়া DA-সহ চার দফা দাবিতে রাজ্যজুড়ে ২ দিনের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। গত ১০ এবং ১১ অক্টোবর কর্মবিরতি পালন করেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। এ নিয়ে পঞ্চমবার কর্মবিরতির ডাক দিলেন DA-আন্দোলনকারীরা। যে চারটি দাবিতে তাঁরা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলেন সেগুলি হল, কেন্দ্রীয় হারে DA, রাজ্য সরকারি অফিসে শূন্যপদে স্বচ্ছ ও স্থায়ী নিয়োগ, প্রতিহিংসামূলক বদলি অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং যোগ্য অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ীকরণ।  


অন্যদিকে, ধর্মতলায় গাঁধী মূর্তি পাদদেশে অবস্থানে ২০১৬-র এসএলএসটির চাকরিপ্রার্থীরা। কেটে গিয়েছে আন্দোলনের ৯৫৫টা দিন। যোগ্যদের নিয়োগের দাবিতে, আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রাস্তার উপর। যাঁদের আজ স্কুলে বসে পড়ানোর কথা, রাস্তায় বসে তাঁরা চাকরির দাবিতে চোখের জল মুছছেন। কেটেছে অনেকগুলো উৎসবের রাত। তাঁরা ভুলেছেন বাড়ির পথ। রোদ, ঝড়, জল বৃষ্টি মাথায় করেই চাকরির দাবিতে রয়েছেন পথে। একটা উৎসব পেরিয়ে এসেছে আরেকটা উৎসব। অথচ তাঁদের জীবনে আসেনি কোনও নতুন স্বপ্নের হাতছানি। এদিন আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের (Job Seekers Agitation) সঙ্গে দেখা করতে যান কংগ্রেস নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়। মিষ্টি খাইয়ে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বিজয়া-দশমীর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন কংগ্রেস নেতা।