কলকাতা: এবার সুষ্ঠ ও অবাধ নির্বাচনের দাবিতে পঞ্চায়েত ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করানোর দাবি ডিএ আন্দোলনকারীদের। ধর্নামঞ্চ থেকে প্রতিনিধিদল গেল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসে। তারপর তাঁরা কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের অফিসে গিয়ে প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওযার দাবি জানান। পাশাপাশি ভোটকর্মীদের নিরাপত্তার দাবিও সুনিশ্চিত করার দাবি জানান তাঁরা। ডিএ এবং স্বচ্ছ নিয়োগের দাবির পাশাপাশি এই দুটি দাবিও যুক্ত হয়েছে তাঁদের তালিকায়। বিষয়টি রাজ্যপাল এবং মুখ্যসচিবকেও চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন তাঁরা। 


বকেয়া DA-র দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মীদের অবস্থান-বিক্ষোভ অব্যাহত। আজ সেই ধর্নামঞ্চে রহস্যময় পোস্টারের ঘটনায় ফের চাঞ্চল্য ছড়াল। নাটক বন্ধ না করলে মঞ্চ ওড়ানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে পোস্টারে। এই নিয়ে ময়দান থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন DA-আন্দোলনকারীরা। গতকাল সরকারি কর্মীদের আন্দোলনকে নাটক বলে কটাক্ষ করেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। সেই একই শব্দবন্ধ পোস্টারে ব্যবহার হওয়ায় নেপথ্যে রাজনৈতিক ইন্ধন? প্রশ্ন তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। যদিও গতকাল রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের পরেও আন্দোলনে অনড় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। বকেয়া DA-র দাবিতে শহিদ মিনারে ধর্না-অবস্থান আজ ৪৬ দিনে পড়ল। অনশন আন্দোলনের ৩২ তম দিন। রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস অনশন তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানালেও, রাজ্য সরকার সদর্থক ভূমিকা না নিলে আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। 


রবিবার রাজ্যপালের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠকের পরও কাটেনি DA-জট! রাজ্য সরকার সম্মানজনক শর্তে রাজি হলে তবেই অনশন প্রত্যাহার করা হবে, বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের তরফে। এই নিয়ে যখন আন্দোলনকারী ও তৃণমূল সরকারের মধ্যে বাদানুবাদ সপ্তমে পৌঁছেছে, তখনই গোটা বিষয়ে অন্য মোড় দিল এই পোস্টার! যেখানে সরাসরি হুমকি দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারীদের! আন্দোলনকারীদের দাবি, অবস্থান মঞ্চের পিছন দিকে কেউ বা কারা ওই পোস্টার ফেলে দিয়ে গেছে। যার বিরুদ্ধে রবিবার রাতেই ইমেলে পুলিশকে অভিযোগ জানান আন্দোলনকারীরা। সোমবার লিখিত অভিযোগ জানানো হয় ময়দান থানায়।



কিন্তু কারা দিয়েছে এই পোস্টার? তা নিয়েই দানা বেধেছে রহস্য! রবিবার DA আন্দোলনকে নাটক বলে তীব্র কটাক্ষ করেছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এবার হুমকি পোস্টার নিয়ে পাল্টা শাসকদলের দিকে আঙুল তুললেন আন্দোলনকারীরা। DA আন্দোলনের মঞ্চে হুমকি পোস্টার, তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। তারপরও ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA-এর ফারাক রয়েছে ৩২ শতাংশ।


বকেয়া DA না মেটালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজে তাঁরা অংশ নেবেন না বলে, আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। সোমবার আরও এক ধাপ এগিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তাঁরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট না করালে, তাঁরা ভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন না। রাজন্য নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি, এদিন রাজভবনে গিয়েও একই দাবি জানিয়ে এসেছেন আন্দোলনকারীরা। ইমেল মারফৎ মুখ্যসচিবকেও নিজেদের দাবিদাওয়া জানিয়েছেন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। এদিকে বকেয়া DA-র দাবিতে সোমবার ৪৬ দিনে পড়েছে অবস্থান বিক্ষোভ। অনশন পড়ল ৩২ দিনে।  এদিন সকালে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন এক অনশনকারী। সুরজিৎ মণ্ডল নামে ওই আন্দোলনকারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।