মোহন প্রসাদ, দার্জিলিং: পাহাড়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য গৃহনির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ। গুরুং সাংস্কৃতিক ও উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং ওএসডি-র বিরুদ্ধে FIR দায়ের করেছেন এক দম্পতি। দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসতেই শুরু হয়েছে পরস্পর দোষারোপের পালা।
সম্প্রতি নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক বছরে মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভান্স সেলে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্প নিয়ে। একই অভিযোগ উঠেছে পাহাড়েও। পাহাড়ে রাজ্য সরকারের অনুদানের অর্থে বিভিন্ন জনজাতি বোর্ডের মাধ্যমে দরিদ্র বাসিন্দাদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হয়, সেই প্রকল্পের কাজেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে পাহাড়ে। পশ্চিমবঙ্গ গুরুং সাংস্কৃতিক ও উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং ওএসডি-র বিরুদ্ধে রংলি-রংলিয়েত থানায় FIR দায়ের করেছেন এক দম্পতি।
কোন প্রকল্পে নিয়ে অভিযোগ:
পাহাড়ের ১৬টি জনজাতি বোর্ডের মাধ্যমে বাড়ি তৈরির জন্য পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করে রাজ্য সরকারের তফশিলি ও অনগ্রসর উন্নয়ন দফতর। সেই প্রকল্পেই টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে।
কী অভিযোগ?
অভিযোগ, বাড়ির জন্য আধার কার্ড সহ-যে সব নথি জমা দিয়েছিলেন তাঁরা, তার সাহায্যে আবেদনকারীর নামে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছে উন্নয়ন বোর্ড। অভিযোগ, বাড়ি তৈরির জন্য বরাদ্দ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে ওই ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। অথচ জমা দেওয়া নথি হারিয়ে গিয়েছে দাবি করে দ্বিতীয়বার সব কাগজপত্র চেয়েছে উন্নয়ন বোর্ড। অভিযোগকারী থারবু গুরুং বলেন, দীপ্তি গুরুংয়ের নামে পাসবুক বানিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে গিয়েছে। সরোজ গুরুং আর চেয়ারম্যান ছাড়া আর কে করবে এই কাজ!'
পাল্টা দাবি:
অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসার পরেই শুরু হয়েছে দায় ঠেলাঠেলি। পশ্চিমবঙ্গ গুরুং সাংস্কৃতিক ও উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান খগেন্দ্র গুরুং বলেন, 'জানুয়ারিতে বোর্ড মিটিং করে ভাইস চেয়ারম্যান ও বোর্ড মেম্বার ললিত গুরুংকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম ঘর তৈরির জন্য। এখন শুনছি বেনিয়ম হয়েছে। গুরুং বোর্ড ও আমার বিরুদ্ধে বাইরের কারও ষড়যন্ত্র রয়েছে।' পশ্চিমবঙ্গ গুরুং সাংস্কৃতিক ও উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য ললিত গুরুংয়ের দাবি, 'ওই অ্যাকাউন্টে তো কোনও টাকাই নেই।'
এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে দার্জিলিং ও কালিম্পং (পাহাড়) তৃণমূলের সভানেত্রী শান্তা ছেত্রী বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস উন্নয়নের বিষয়। ডিএম, এসডিও দেখে।'
এই বিষয়টি নিয়ে জানতে দার্জিলিংয়ের জেলাশাসককে ফোন করা হলে, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত তিনি ফোন ধরেননি।
আরও পড়ুন: ৮ বছর পর খুলল চা বাগান, জারি থাকল তৃণমূল-বিজেপি তরজা