সৌমেন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর: ন্যায়বিচারের দাবিতে এবার জেলা জজের (District Judge) দফতর থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে অবস্থানে বসেছিলেন মাতৃহারা যুবতী (Daughter Of A Deceased Woman On Demonstration)। অভিযোগ, চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে মারা গিয়েছেন মা। মামলা করায় উল্টে তাঁকেই হুমকি দিচ্ছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক, আরও দাবি তাঁর। মেদিনীপুর জেলা দায়রা আদালত চত্বরের অদূরে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্ত ডাক্তার সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেন। তবে আজ কেস ডায়রি দেখে অভিযুক্তের জামিন নাকচ করেন বিচারক।
কী জানা গেল?
এর জন্য কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে হবে। যুবতীর দাবি, গত ২০ সেপ্টেম্বর মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে জরায়ুতে টিউমার নিয়ে ভর্তি হন তাঁর মা, দীপালি খামরাই। অপারেশনও হয়েছিল তাঁর। কিন্তু দীপালির কন্যার বক্তব্য, অপারেশনে গাফিলতির জেরে তার পর থেকে মায়ের পেট ফুলতে থাকে। এর পর আরও একটি সার্জার করা হয়েছিল দীপালির। ২৬ সেপ্টেম্বর মারা যান তিনি। যুবতীর অভিযোগ, এই নিয়ে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলেও এফআইআর নেওয়া হয়নি। পরে মেদিনীপুর আদালতে আবেদন করলে, কোর্টের নির্দেশে ২৭ সেপ্টেম্বর এফআইআর হয়। কিন্তু অভিযোগ, তারপর থেকে অভিযোগকারীর সঙ্গে থানা কোনও কথা বলেনি। গত কাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পুলিশ জামিনের বিরোধিতা না করায় অভিযুক্ত চিকিৎসক কাঞ্চন ধাড়ার জামিন হয়ে যায়। আর তারপরেই আজ, শুক্রবার আদালতের সামনে ধর্নায় বসেন মৃতার মেয়ে তথা অভিযোগকারী। তাঁর দাবি, নানাভাবে মামলা তোলার জন্য চাপ দেখানো হচ্ছে তাঁকে। পুলিশের উপরেই তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। এই নিয়ে জেলার পুলিশ সুপারকে একাধিকবার ফোন করা হয়েছিল। তিনি ফোন তোলেননি। অভিযোগ অস্বীকার করেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। এদিন তাঁকে ১৪ গিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
এক দিনের ব্যবধানে তাঁর জামিন নাকচ হওয়ার কারণ কী? বিচারক পুলিশকে জানিয়েছিলেন, আজ মামলার কেস ডায়েরি জমা দিতে হবে। যদিও অভিযোগকারী জানান, পুলিশ গত ৩ মাসে তাদের সঙ্গে কোনও কথা বলেনি। তার পর গত কাল, হঠাতই জামিনের পক্ষ নিয়েছিল। আজ কোর্টের নির্দেশ মতো কেস ডায়েরি জমা দেয় পুলিশ। সেটি দেখেই অভিযুক্ত চিকিৎসককে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন ভারপ্রাপ্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। একদিনের ব্য়বধানে বাতিল হয় জামিন।