হংসরাজ সিংহ, পুরুলিয়া: জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে শুরু হল ১৮তম জয়চন্ডী পাহাড় পর্যটন উৎসব (Joychandi Hill Tourism Festival)। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) আদিত্য বিক্রম হীরানিও আসেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।


আর যা...
রঘুনাথপুরের এসডিও তামিল ওভিয়া এস, রঘুনাথপুরের এসডিপিও অবিনাশ ভীমরাও যাধোয়ার, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী-সহ আরও জেলা প্রশাসনের অনেক কর্তাব্যক্তিই আসেন ওই অনুষ্ঠানে। হাজির ছিলেন কমিটির সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া, সম্পাদক তথা রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান তরণী বাউরি প্রমুখ। প্রসঙ্গত, জয়চন্ডী পাহাড় ঘিরে পর্যটনের বিকাশের জন্য এই উৎসব শুরু করেছিলেন এলাকার প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া। কয়েক মাস আগেই প্রয়াত হয়েছেন তিনি। গত কাল, বৃহস্পতিবার, উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। সৌমেন বলেন, 'ইতিমধ্যেই জয়চন্ডীকে ঘিরে পর্যটনের বিকাশ হয়েছে। এলাকায় সুসংহত পর্যটন কেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে উৎসব কমিটি।'


কেন আকর্ষণের কেন্দ্র জয়চন্ডী পাহাড়?
পুরুলিয়ার  অন্যতম আকৰ্ষণ এই জয়চন্ডী রেল স্টেশন থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আদ্রা স্টেশন থেকেও এখানে চলে আসা যায়।  এই পাহাড়ে সত্যজিৎ রায়ের হীরক রাজার দেশে ছবির শুটিং হয়েছিল। ফলে সেই টানে শীতের  সময়টা বহু পর্যটক এখানে ভিড় জমান। এছাড়া আরও বেশ কিছু ছবির শুটিং এখানে হয়েছে। জয়চন্ডী পাহাড়ের ওপরে আছে জয়চন্ডী মন্দির ও বজরং মন্দির। বস্তুত, পুরুলিয়া জুড়ে দেখার জায়গা নেহাত কম নয়। পর্যটকদের জন্য আকর্ষণের নানা কারণ ছড়িয়ে রয়েছে এই জেলায়। 


অযোধ্যা পাহাড়: অযোধ্যা পাহাড় পুরুলিয়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং বিখ্যাত পর্যটন গন্তব্যগুলির মধ্যে একটি। কারণ এই পাহাড় প্রধান শহরের কেন্দ্র থেকে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত। অনেকে বিশ্বাস করেন যে স্থানটির পৌরাণিক গুরুত্ব রয়েছে। কারণ ভগবান রাম এবং সীতা তাদের নির্বাসনের সময় এখানে বসবাস করেছিলেন বলে কথিত আছে।


গড়পঞ্চকোট মন্দির: এই মন্দির ছিল সিং দেও রাজত্বের অংশ।  এই মন্দির গুলি বর্গী আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং অধিকাংশ ধ্বংস হয়।  এখনো সেসব মন্দিরের কিছু অবশিষ্ঠ আছে।  পুরুলিয়া শহর থেকে গড়পঞ্চকোটের দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার। 


পাঞ্চেৎ ড্যাম: পাঞ্চেৎ ড্যাম গড় পঞ্চকোট থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাঞ্চেৎ ড্যাম।  এই ড্যামটি পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খন্ড দুই রাজ্যের বর্ডারে আছে এই ড্যামটি। এই ড্য়ামের সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই।


সাহেব বাঁধ: সাহেব বাঁধ পুরুলিয়ার সবচেয়ে অন্তর্নিহিত জলাশয়, যা ৫০ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।কর্নেল টিকলি ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ প্রশাসনের অধীনে এই স্থানটি নির্মাণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।এই জলাধার একটি ইতিহাস আছে।কর্নেল টিকলি বেশ কয়েকজন কয়েদিকে এই জলের ঝরনার জন্য খনন শুরু করতে বাধ্য করেন। যে কারণে এই বিশাল ট্যাঙ্কটি তৈরি করতে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় লেগেছে।এই স্থানটি এখন পুরুলিয়ার অন্যতম প্রধান পর্যটন আকর্ষণ।


 আরও পড়ুন:কেষ্টপুর বাসিন্দার ফ্ল্য়াটে ২ কোটি ! বিহার থেকে কলকাতায় এসে খুঁজে বের করল ED