শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে কোচবিহারের মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে তুলকালামকাণ্ড। চলল ভাঙচুর। চিকিত্সককে মারধর মৃতের পরিবারের আত্মীয়দের। পরিবারের অভিযোগ, ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়াতেই মৃত্যু হয়েছে। চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 


আঙুল উঁচিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে বচসা। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মধ্যেই, একজন তেড়ে গেলেন চিকিৎসকের দিকে। চিকিৎসক এগিয়ে আসতেই শুরু হল বেধড়ক মারধর। একদল যখন চিকিৎসককে মারছে, অন্য দল তখন চেয়ার-টেবিল তুলে মাটিতে আছাড় মাড়তে শুরু করেছে। চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে এমনই ধুন্ধুমারকাণ্ড বাধল কোচবিহারের মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে (Coochbehar Mathavanga Mahakuma Hospital)। 


সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে সেই ছবি। বৃহস্পতিবার ভোরে সাপের কামড় খাওয়া, ২৮ বছরের ফারুক রহমানকে মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিবারের দাবি, চিকিৎসক এসে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর মৃত্যু হয় ফারুকের। ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়াতেই ফারুকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাঁর পরিবার।


মৃত্যুর পরই হাসপাতালে ভাঙচুর শুরু করেন রোগীর আত্মীয়রা। মারধর করা হয় কর্তব্যরত চিকিৎসককেও। মুহূর্তে লন্ডভন্ড হয়ে যায় গোটা হাসপাতাল। কাচের টুকরোয় ভরে যায় চারদিক। 


মৃতের মা নুরজাহান বিবির কথায়, ছেলে সকালে অসুস্থ হয়েছিল। হাসপাতালে আনি স্যালাইন দেয়। ডাক্তারবাবু ইঞ্জেকশন দেয়, তারপর ছেলে আর নড়ে না। ডাক্তারবাবু বলে ছেলে ঠিক আছে। আরেক ডাক্তারবাবু এসে বলল মারা গেছে। সাপে  কামড়েছিল।


কোচবিহারের মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালের আক্রান্ত চিকিৎসক অভিষেক সরকারের কথায়, লোকজন এসে বলল আমরা রোগীর আত্মীয়। ওরা বলল আমরা তাঁকে কেন বিষ খাওয়ার ওষুধ দেওয়া হয়েছে। ওদের দাবি সাপে কামড়েছে। তর্কাতর্কি বাড়তে বাড়তে মারধর, আমি তো দেখিনি পেসেন্টকে। তার আগেই মৃত্যু। কথা বার্তার সময় আমার গায়ে টাচ লাগে, তারপর মারধর। 


এ বিষয়ে, মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালের সুপার জানিয়েছেন,  চিকিৎসায় গাফিলতি হয়নি। চিকিৎসককে মারধর ও হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় মাথাভাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।