সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ফের ডেঙ্গি বিপদ কলকাতায়। ফের প্রাণহানি। এবার উত্তর কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুর ঘটনা। বাগবাজারের বাসিন্দা এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে নার্সিংহোমে। তাঁর মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গি ও মাল্টি অর্গান ফেলিওরের উল্লেখ রয়েছে। এর আগে হাওড়া-হুগলিতেও ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।


বাড়ছে ডেঙ্গি:
কলকাতা শহরে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের (Denhue Infected) সংখ্যা। তার সঙ্গেই ঘটছে মৃত্যুর ঘটনাও। এই নিয়ে কলকাতায় ৭ জনের মৃত্যু হল। আর মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। এতদিন দক্ষিণ কলকাতাতেই ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা যাচ্ছিল। এবার মৃত্যুর ঘটনা ঘটল উত্তরেও। 


মৃত্যু এক মহিলার:
ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃতের নাম মলিনা দাস। ৩৮ বছরের ওই মহিলা বাগবাজারে, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ভর্তি ছিলেন একটি নার্সিংহোমে। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি ও মাল্টি অর্গান ফেলিওরের উল্লেখ করা হয়েছে। মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন আরজি কর হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন ছিলেন মহিলা। তারপরে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় আইসিইউ-এর (ICU) প্রয়োজন পড়ে। তখন তাঁকে ভর্তি করা হয় বাগবাজারের ওই নার্সিংহোমে। সেখানেই সোমবার গভীর রাতে মৃত্যু হয় রোগীর। 


ডেঙ্গি-আশঙ্কা পুরসভার অন্দরেও:
ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ কলকাতা পুর প্রশাসন। পরিস্থিতি সামলাতে সোমবারই বৈঠক করেছেন পুর কর্তারা। আর সেদিনই রাতে মৃত্যু হয়েছে এই মহিলার। সোমবারের বৈঠকে 'ডেঙ্গি থ্রি' ভ্যারিয়েন্ট নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সিঙ্গাপুরে মিলেছে ডেঙ্গির এই ভ্যারিয়েন্ট। যার মারণ ক্ষমতা অনেক বেশি। কলকাতাতেও সেই ভ্যারিয়েন্ট কামড় বসিয়েছে কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পুরসভার কর্তারা। কলকাতা পুর এলাকায় একের পর এক ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর সামনে আসছে। পাশাপাশি হচ্ছে মৃত্যুও। ফলে প্রশ্ন উঠছে ডেঙ্গির ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে। একটি রিপোর্ট নিয়েও আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে। স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে বলা হয়েছিল, রাজ্যে ডেঙ্গি '২.৭৩' ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মিলেছে। তখন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের বলা হয়, নাইসেডের সাহায্য নিয়ে এটা 'ডেঙ্গি থ্রি' কি না, তা নিশ্চিত করতে।  


একাধিক পদক্ষেপ:
সোমবারের বৈঠকে ডেঙ্গি রুখতে একাধিক উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, কলকাতায় ২৫টি ওয়ার্ডে খোলা হবে ফিভার ক্যাম্প (Fever Camp)। ৪টি সরকারি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে ডেঙ্গি পরীক্ষা কেন্দ্র। এছাড়াও, বেলেঘাটা আইডি ও এমআর বাঙুরে ৮০ বেডের ডেঙ্গি ওয়ার্ড (Dengue Ward) খোলা হচ্ছে। বিসি রায় হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্ত শিশুদের জন্য ১০টি সিসিইউ (CCU) তৈরি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 


আরও পড়ুন: জুন-শ্রীকান্ত হ্যান্ডশেক, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মিটল বিবাদ