কলকাতা: রাজ্যে ভয়ঙ্কর ডেঙ্গি পরিস্থিতি (Dengue Situation)। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্লেটলেটের আকাল (Platelet)। কলকাতার (Kolkata News) ব্লাড ব্যাঙ্কে প্লেটলেটের ভাঁড়ার শূন্য। মানিকতলা ব্লাড ব্যাঙ্ক, এসএসকেএম, আরজিকর, এমআর বাঙুরে প্লেটলেট শূন্য। শিশুমঙ্গল, ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেও একই অবস্থা। 


ডেঙ্গি সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী, আকাল প্লেটলেটের


পিয়ারলেস হাসপাতাল, লাইফ কেয়ারেও প্লেটলেটের সংখ্যা শূন্য। একই অবস্থা জেলার ব্লাড ব্যাঙ্কেও। নর্থ বেঙ্গল মেডিক্যাল কলেজে রয়েছে মাত্র ৩৫ ইউনিট প্লেটলেট। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে রয়েছে ৩৩ ইউনিট। মালদা মেডিক্যাল কলেজে রয়েছে ২১ ইউনিট। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে ২৭ ইউনিট প্লেটলেট। 


রাজ্যে ডেঙ্গিতে সংক্রমিতের সংখ্যা ৫৬ হাজার ছুঁইছুঁই। সবমিলিয়ে ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত। তাতেই প্লেটলেটের আকাল উত্তরোত্তর বেড়ে চরম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শহরের একাধিক ব্লাড ব্যাঙ্কে প্লেটলেটের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। প্লেটলেটের আকাল সর্বত্রই। সপ্তাহান্তে দুর্ভোগের ছবি ধরা পড়েছে একাধিক জায়গায়। কলকাতাও বাদ যায়নি।  এতে যে শুধু ডেঙ্গি আক্রান্তরাই সমস্যায় পড়ছেন তাই নয়, দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন অন্য রোগে আক্রান্ত রোগীর পরিজনরাও। 


শুধুমাত্র শহরের সরকারি হাসপাতালগুলিতেই যে প্লেটলেটের সঙ্কট তাই নয়, একই ছবি বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও। শহরের বেসরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে, রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত অ্যাপোলোতে ৪ ইউনিট, ফর্টিস ২০, মেডিকায় ১৮ ইউনিট বেলভিউ-এ  ৪ ইউনিট প্লেটলেট মজুত থাকার কথা জানা যায়। পিয়ারলেস, ঢাকুরিয়া আমরি, ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ, শিশুমঙ্গল, B M বিড়লাতও একই অবস্থা। পাশাপাশি, লায়ন্স ব্লাড ব্যাঙ্কে প্লেটলেটের ভাঁড়ার শূন্য। পার্কসার্কাসের লাইফ কেয়ার ব্লাড ব্যাঙ্কেছিল ৭০ ইউনিট প্লেটলেট। 


আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: তাজ বেঙ্গলে অভিষেকের ছেলের জন্য এলাহি আয়োজন! শুভেন্দুর দাবি নস্যাৎ করল তৃণমূল


কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ব্লাড ব্যাঙ্কের পরিস্থিতি কেমন দেখতে গিয়েছিল এবিপি আনন্দ। সেখানেও দেখা গেল, অনেক ছোটাছুটি করে কয়েক ইউনিট প্লেটলেটের সংস্থান করতে পেরেছেন এক রোগীর আত্মীয়। তিনি বলেন, "তিন দিন আগে ৬ ইউনিট দরকার ছিল। মায়ের রক্তের অসুখ। ২ ইউনিট পেয়েছে। ছোটাছুটি করতে হয়েছে।"


রাজ্যে ডেঙ্গিতে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি এখন উত্তর ২৪ পরগনায়। সেখানকার হাসপাতাল গুলিতেও প্লেটলেট সঙ্কটের একই ছবি ধরা পড়েছে। ব্যারাকপুর মহকুমা হাসপাতালে কোনও প্লেটলেটের ইউনিট নেই। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ৭ ইউনিট প্লেটলেট মজুত আছে।  


এদিকে, ডায়মন্ডহারবার মেডিক্যাল কলেজ, বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে প্লেটলেটের ভাঁড়ার শূন্য। ডেঙ্গিতে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গেও। সেখানকার, জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে ৬, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ৪৩ ইউনিট, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ২৮, মালদা মেডিক্যাল কলেজ ৪১ ও মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ৭০ ইউনিট প্লেটলেট মজুত আছে। 


উদ্বেগজনক পরিস্থিতি কলকাতা-সহ জেলাগুলিতে


ডেঙ্গি আক্রান্ত হলে প্রতিমুহূর্তে প্লেটলেটের ওঠানামা নিয়ে দুঃচিন্তা থাকেই। সবমিলিয়ে, প্লেটলেটের সঙ্কট যেন ডেঙ্গির উদ্বেগকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।