অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা : আতঙ্কের নাম ডেঙ্গি!  সূত্রের খবর, চলতি বছরে ৩১ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। এর মধ্যে কলকাতা পুরএলাকা মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবারই মৃত্যু হয়েছে গড়ফার বাসিন্দা এক চিকিৎসকের। এরই মধ্যে তৃণমূল কাউন্সিলর পরিচালিত অনাথ আশ্রমে মিলল ডেঙ্গিবাহী মশার লার্ভা।


বিবি গাঙ্গুলী স্ট্রিটের এই অনাথ আশ্রম ও বৃদ্ধাবাসের পরিচালক সমিতির অন্যতম কর্তা ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের
তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে। এখানে থাকেন ৩০০-র বেশি আবাসিক। পুরসভা সূত্রে খবর, ৭ জন করে আবাসিক ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত। পুর অভিযানে আশ্রমের ৪১টি জায়গায় মিলেছে এডিস ইজিপ্টাইয়ের লার্ভা।


কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানালেন, ' নোটিস পাঠানো হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ' । এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে অবশ্য বলললেন, ' জানা নেই। পুরসভা আমাকে এরকম কিছু জানায়নি। ' 


ঘটনা নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছে বিজেপি। তীব্র কটাক্ষ করেছেন ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। পাল্টা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের জবাব, ' ডেঙ্গি হওয়া মানে কাউন্সিলর পাপ করছে তা নয়।' 


মেয়র জানিয়েছেন, গত বছরের থেকে এবার ডেঙ্গি যেমন বেশি। ম্যালেরিয়া গত বছরের থেকে অন্তত ২ হাজার কম। ২০২২-এ কলকাতায় ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়েছিলেন ৭ হাজার ১৪১ জন। এবছর সেই সংখ্যা ৫ হাজার ৭৬।
অন্যদিকে, গত বছর ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৪০০। এবার এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ৭০০।  


অন্যদিকে, হাওড়া পুরসভা এলাকায় একসঙ্গে দাপট দেখাচ্ছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া। হাওড়া পুরসভা এলাকায় সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচশো। সঙ্গে বাড়ছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। জ্বর ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর ভিড়। হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ৫০টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৫৪৮। এর মধ্যে ৪, ২৩ ও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ছড়িয়েছে। 
অন্যদিকে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গলাহাট এলাকা যথেষ্ট ঘিঞ্জি এবং প্রতিদিন সেখানে প্রচুর মানুষের যাতায়াত রয়েছে। 
ওই এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। 


এডিস ইজিপ্টাই মশার শরীরে থাকে ডেঙ্গির জীবাণু! সাধারণত এই মশা কামড়ায় দিনে। আর ম্যালেরিয়া হয় অ্যানোফিলিস মশার কামড়ে। এই মশা রাতে কামড়ায়। বর্ষায় দুয়ের প্রকোপই বাড়ছে। আতঙ্কে সাধারণ মানুষ। এই অবস্থায় সতর্কতামূলক প্রচার চালাচ্ছে প্রশাসন। মশার হাত থেকে বাঁচতে মশারি ব্যবহার ও জ্বর না কমলে রক্তপরীক্ষা করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।