সন্দীপ সরকার, কলকাতা: পুজোকে আর মাসখানেকও বাকি নেই। কিন্তু এখনও বিরাম নেই ডেঙ্গির। গত ৩ সপ্তাহে রাজ্যে নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, যে সব জেলায় ডেঙ্গির দাপট রয়েছে, সেখানে মশা নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়া হচ্ছে। উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।

পুজোর মুখে রাজ্যে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি। গত ৩ সপ্তাহে রাজ্যে নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন দু'হাজারের বেশি মানুষ। ১৩ অগাস্ট সংখ্যাটা ছিল ৪ হাজার ৩৯৪। ৪ সেপ্টেম্বর সেটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪০০। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যের ৬ জেলা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর চব্বিশ পরগনা, হুগলি, মালদা, হুগলি, মালদা, কলকাতা ও হাওড়ায় বেশি বেড়েছে ডেঙ্গি সংক্রমণ। ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে শীর্ষে রয়েছে মুর্শিদাবাদ। সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০০ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ২৪৯।

দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। গত ৩ সপ্তাহে সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮৩ জন। মোট আক্রান্ত ১হাজার ১০৯। আর তৃতীয় স্থানে রয়েছে হুগলি। সেখানে নতুন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭২ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯১। মালদায় নতুন করে আক্রান্ত ১২২ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯৪। পাঁচ নম্বর স্থানে রয়েছে কলকাতা। শহরে গত ৩ সপ্তাহে নতুন করে আক্রান্ত ১৫৪ জন। মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮২।

এছাড়া হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমানেও আক্রান্তের সংখ্যা নেহাত কম নয়। মূলত আক্রান্তের নিরিখে প্রথম দিকে রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিই। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে একমাত্র মালদাতেই বেশি রয়েছে আক্রান্তের সংখ্য়া। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। যে সব জেলায় ডেঙ্গির দাপট দেখা যাচ্ছে, সেখানে মশা নিয়ন্ত্রণে জোর দেওয়া হচ্ছে। 

গত এক মাসে, মেঘ-বৃষ্টির খামখেয়ালিপনায় রাজ্য জুড়ে জায়গায় জায়গায় জমছে জল, আর তাতেই জন্মাচ্ছে ডেঙ্গির মশার লার্ভা। গত বৃহস্পতিবার, মৃত্যু হয়েছে বেহালার পর্ণশ্রীর বাসিন্দা এক ডেঙ্গি আক্রান্তের। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্য়ুর কারণ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে ডেঙ্গির। উদ্বেগের বিষয় হল, চিকিৎসক মহলের একাংশের দাবি, আক্রান্তদের বেশিরভাগই ভুগছেন টাইপ টু ডেঙ্গিতে। যা অন্যান্য সেরোটাইপের তুলনায় বেশি মারাত্মক। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হন ৬৭ হাজার ২৭১ জন। ২০২৩ সালে রাজ্য়ে ডেঙ্গি সংক্রমণ ভেঙে দেয় ১২ বছরের রেকর্ড। ওই বছর রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হন প্রায় ১ লক্ষ ৭ হাজার জন। তার পরের বছর আক্রান্ত হন ৩১ হাজার ১০০ জন।