কলকাতা: রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক (Dengue Situation)। এবার স্বাস্থ্য দফতরের (WB Health Department) পর্যালোচনা বৈঠকেও উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেল, চলতি বছরে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ হাজার ৭০৯। জুলাই থেকে অগাস্ট মাস পর্যন্ত পাঁচ গুণ বেড়েছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। জুন মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২৪। জুলাইয়ে তা বেড়ে হয় ৩ হাজার ৭৭৮। (WB Dengue Situation)



স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভা এলাকায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১৫০০। যদিও বেসরকারি মতে, ডেঙ্গিতে রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৩১, সরকারি মতে মৃতের সংখ্যা ৩। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যকে আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, ডেঙ্গি মোকাবিলায় ব্যর্থ প্রশাসন। তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন।


রাজ্যের সমস্ত জেলা এবং পুরসভা এলাকাগুলি মিলিয়ে এই পরিসংখ্যান মিলেছে। স্বাস্থ্য দফতরের পর্যালোচনা বৈঠকে তা তুলে ধরা হয়। আর তাতেই উদ্বেগজনক চিত্র সামনে এসেছে। জুন মাসে যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২৪, তা একলাফে বেড়ে ৩ হাজার ৭৭৮ হয় জুলাই মাসে। সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ পর্যন্ত তা আরও বেড়ে হয় ২৪ হাজার ৭০৯। 


আরও পড়ুন: Vishwakarma Yojana: জন্মদিনে বিশ্বকর্মা প্রকল্প মোদির, কেন অনুপস্থিত তৃণমূল সরকার, প্রশ্ন কেন্দ্রের


ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে পুরসভা এলকাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। আর্বান ডেভলপমেন্ট বোর্ডের তরফে পুর এলাগুলিতে অ্যালাইজা মেশিন পাঠানো হয়েছে।  ১৮টি পুর এলাকাকে এই মেশিন পাঠানো হয়েছে, যাতে নিজেদের এলাকায় ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারে তারা। ফিভার ক্লিনিকের সংখ্যাও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। পৌরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান না অধিকাংশ মানুষ । বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোম পরীক্ষা করান। সেই তথ্য় যাতে সময় মতো স্বাস্থ্যভবনের হাতে পৌঁছয়, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।


এখনও পর্যন্ত যে ২৪ হাজার ৭০৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন, তার মধ্যে ১৭ হাজার নমুনা পজিটিভ বলে ধরা পড়ে সরকারি হাসপাতালের ল্যাবে। বাকি ৭ হাজার ধরা পড়ে বেসরকারি ল্যাবে। পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের তরফে কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। যদিও এ নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, "ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কলকাতার কোনও বেসরকারি হাসপাতালে শয্যা নেই। ঠিক করে পরীক্ষা হচ্ছে না। বাড়িতে বাড়িতে জ্বর। ফেব্রুয়ারি-মার্চে, ডেঙ্গি আসার আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু তা না মেনে টাকা অন্য খাতে খরচ হয়েছে। মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে ব্যর্থ রাজ্য সরকার।"


যদিও তৃণমূল সাংসদ শান্তনু জানিয়েছেন, "কিছু কিছু ঋতুতে মশাবাহিত রোগ বেশি ছড়ায়। আবহাওয়ার পরিবর্তনের জন্যই এমন হয়। শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশ, বিশ্বে এই রোগ দ্রুত ছড়ায়। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, কলকাতা পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতর যথেষ্ট তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে। তাই যে পরিমাণ সংক্রমণ হওয়ার কথা, যে পরিমাণ বিপর্যয় হওয়ার কথা, তা হচ্ছে না।"