কলকাতা: নিজের জন্মদিনে 'বিশ্বকর্মা প্রকল্পে'র (Vishwakarma Yojana) সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এর আওতায় দরিদ্র মানুষের দারুশিল্পী, মৃৎশিল্পী, লৌহশিল্পী, স্বর্ণকারদের প্রশিক্ষণ, ভাতা দেওয়ার পাশাপাশি ব্যবসায় অর্থসাহায্য়ের ঘোষণা করা হয়েছে। সেই নিয়ে রাজনৈতিক তরজার মধ্যেই এবার বাংলার তীব্র সমালোচনা করলেন কেন্দ্রী মন্ত্রী আরকে সিংহ। বাংলার তরফে মোদির ওই অনুষ্ঠানে কেউ কেন হাজির ছিলেন না, প্রশ্ন তুললেন তিনি। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। (TMC)
রবিবার এই 'বিশ্বকর্মা প্রকল্পে'র সূচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল কলকাতাতেও। সেখানে রাজ্যের তরফে কোনও প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে সংবাদমাধ্যমে এদিন বাংলার তীব্র সমালোচনা করেন আরকে সিংহ। তিনি বলেন, "এই নতুন প্রকল্প নিয়ে তৎপর হওয়া উচিত ছিল রাজ্য সরকারের। কিন্তু আজকের অনুষ্ঠানে রাজ্যের কোনও প্রতিনিধিই নেই। নিজেদের কর্তব্য পালন করছে না রাজ্য সরকার। আমজনতার কাছে প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া উচিত রাজ্যের। প্রকল্পের খরচ বহন করবে কেন্দ্র, রাজ্যকে কোনও খরচ করতে হবে না। রাজ্য সরকার না চাইলেও আমজনতা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে।"
এ নিয়ে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনও। তাঁর বক্তব্য, "প্রথম কথা, কেন্দ্রের চেয়ে অনেক বেশি ভাল প্রকল্প আমাদের আছে। বেটি বাঁচাওয়ের যে বাজেট, তার চেয়ে অনেক বেশি বাজেট আমাদের কন্যাশ্রী প্রকল্পের। আয়ুষ্মান ভারতকে চেয়ে ১০০ গুণ ভাল প্রকল্প স্বাস্থ্য সাথী। লক্ষ্মী ভাণ্ডার থেকে কৃষকদের যে প্রকল্প করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেন্দ্রের চেয়ে অনেক ভাল। আর যে প্রকল্পে সত্যিই কেন্দ্রের সহযোগিতা প্রয়োজন, তার টাকা আটকে রেখেে। বিজেপি শাসিত রাজ্যের চেয়ে ভাল পারফর্ম করা সত্ত্বেও ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পের টাকা আটকে রাখা হয়েছে।"
আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: 'কোথায় নেতাজি, আর কোথায় পেঁয়াজি', মোদির সঙ্গে তুলনা, মমতাকে কটাক্ষ দিলীপের
১৭ সেপ্টেম্বর জন্মদিন মোদির। আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনও এগিয়ে আসছে। তার আগে, রবিবার 'বিশ্বকর্মা প্রকল্পে'র সূচনা করলেন তিনি। এর আওতায়, ছুতোর, কুমোর, কামার, মৃৎশিল্পী, মুচি সকলেই লাভবান হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেন, "ভগবান বিশ্বকর্মার আশীর্বাদে আজ প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনার আরম্ভ হল। যোজনায় ১৮-এ আলাদা আলাদা ক্ষেত্রের বিশ্বকর্মা সাথীদের ফোকাস করা হচ্ছে। ছুতোর, কামার, কারিগর, স্য়াঁকরা, কুমো়র, মূর্তিকার, মুচি, রাজমিস্ত্রি, ধোপা, দর্জি, নৌকা তৈরি, জাল তৈরির কারিগর, সকলকে শামিল করা হয়েছে।"
মোদি জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের আওতায়, প্রথমে শ্রমিকদের ১৫ দিনের জন্য় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সেই সময়, প্রতিদিন শ্রমিকদের ৫০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে কেন্দ্রের তরফে। দ্বিতীয় দফায় দেওয়া হবে সাত দিনের ট্রেনিং। প্রতিটি ব্লকে প্রশিক্ষণ শিবিরের ব্য়বস্থা করা হবে। এর পর, টুল-কিট কেনার জন্য় দেওয়া হবে, ১৫ হাজার টাকা করে অর্থ সাহায্য়। ব্যবসা শুরু করতে বিনা গ্য়ারান্টিতে ৩ লক্ষ টাকা ঋণও মিলবে। প্রথম দফায় দেওয়া হবে, ১ লক্ষ। সেটি পরিশোধ করে দিলে, দেওয়া হবে, বাকি ২ লক্ষ টাকা ঋণ। লোকসভা নির্বাচনের আগে ভোটের ঝুলি ভরতেই জন্মদিনে মোদির এই ঘোষণা বলে দাবি বিরোধীদের। এটিও এক ধরনের 'জুমলা' বলে দাবি কংগ্রেসের।