ঝিলম করঞ্জাই ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: রাজ্যে (West Bengal) ডেঙ্গি (Dengue) পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্য দফতরের (West Bengal Health Department) রিপোর্ট বলছে, গত এক সপ্তাহে ৫,৩৬৯ জন নতুন করে রাজ্যে ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্ত হয়েছেন। জেলার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Pargana) ডেঙ্গি (Dengye) আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি। পুরসভাগুলির মধ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ সবথেকে বেশি কলকাতা পুর এলাকায় (KMC)।
স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে উদ্বেগ: উত্সবের মরশুমে ডেঙ্গি (Dengue) নিয়ে উদ্বেগ দিন দিন বাড়ছে। স্বাস্থ্য দফতরের বৃহস্পতিবারের রিপোর্ট সেই উদ্বেগের মাত্রা আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, শুধু গত এক সপ্তাহে ৫ হাজার ৩৬৯ জন নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। জেলাগুলির মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এক সপ্তাহে ১ হাজার থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ২৫০।
৪টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ সবথেকে বেশি: ডেঙ্গির পজিটিভিটি রেট ১০ দশমিক ৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ১২.৯। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, পুরসভাগুলির মধ্যে ডেঙ্গির প্রকোপ সবথেকে বেশি কলকাতা পুরসভা এলাকায়। ১০১, ১০৯, ১১২ ও ১২১- এই চারটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ সবথেকে বেশি। ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে আগে কোনও আক্রান্ত না থাকলেও, এক লাফে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ১৫৪ শতাংশের বেশি। কলকাতার ডেঙ্গি পরিস্থিতি যে সন্তোষজনক নয়, তা মানছেন মেয়রও।
কলকাতা পুরসভা মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ডেঙ্গি পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। এখনও বেশ কিছু জায়গায় ডেঙ্গির প্রবণতা রয়েছে। পুরকর্মীদের পুজোর ছুটি বাতিলের মেয়াদ আরও বাড়ানো হয়েছে। কলকাতা পুরসভার যে ফিভার সেন্টারগুলি রয়েছে, তাতে রোগী আসার সংখ্যাও বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য ভবন বেশ কয়েকটি পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকও করেছে।
বৃষ্টির প্রকোপে ডেঙ্গির উপদ্রব: চিকিত্সকদের মতে, বৃষ্টি না কমলে এখনই ডেঙ্গির প্রকোপ কমার সম্ভাবনা নেই। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাসপ্রসূন গিরি বলছেন, বৃষ্টি চলছে, নিম্নচাপ হচ্ছে। তার সঙ্গে খুঁটির গর্ত, মণ্ডপের আশপাশে মেলা- এগুলো সরানো না হলে ডেঙ্গির প্রকোপ নিম্নমুখি হবে না। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ডেঙ্গির প্রকোপ কমার সম্ভাবনা নেই, তবে চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি আক্রান্ত শিশুদের অনেকের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি খুব একটা হাতের বাইরে যাচ্ছে না।
প্রভাসপ্রসূন গিরি আরও বলেছেন, এবার ডেঙ্গিতে আক্রান্ত সিশুদের মধ্যে সঙ্কটজনক শিশুর সংখ্যা কম। হয়ত অভিভাবকরা সচেতন হয়ে আগে আসছেন। এখন যে ভ্যারিয়েন্ট দেখা যাচ্চে এখানে, তা হয়ত শিশুদের ওপর অতটা ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলছে না। এখন তাই ডেঙ্গির প্রকোপ কমাতে বৃষ্টি থামার অপেক্ষা।