সন্দীপ সরকার,  কলকাতা : ডেঙ্গি ( Dengue ) পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের রিভিউ বৈঠকে চাঞ্চল্যকর তথ্য! রাজ্যজুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্য়া। হাসপাতালে হাসপাতালে বেডের আকাল। হিসাব বলছে, ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্য়া প্রায় ২৫ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে! শুধুমাত্র কলকাতা পুরসভা এলাকাতেই এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫০০ জন। শহরজুড়ে ডেঙ্গি আক্রান্ত ও ডেঙ্গি সন্দেহে ভর্তির সংখ্য়া যে হারে বাড়ছে তাতে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরে বহুক্ষেত্রেই একটি বেড পেতে সমস্য়ায় পড়ছেন রোগীরা।  এই অবস্থায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সমানে চলছে রাজনৈতিক তরজা!   


বাংলা থেকে এখনও পাকাপাকিভাবে বিদায় নেয়নি বর্ষা। এই পরিবেশে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে ডেঙ্গির মশার দাপট আর একের পর এক মৃত্যুসংবাদ! ক্রমশ ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে বাংলার ডেঙ্গি পরিস্থিতি। স্বাস্থ্য দফতরের রিভিউ বৈঠকেও উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য! হিসাব বলছে, ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্য়া প্রায় ২৫ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে! পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগের যে, রবিবার, ছুটির দিনেও রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্র সচিব! পরিসংখ্যান বলছে, জুলাই মাস থেকে অগাস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গির সংক্রমণ ৫ গুণ বেড়েছে! 

রাজ্য় সরকার এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ৩ জনের মৃত্যুর কথা বললেও, বেসরকারি একাধিক সূত্র বলছে, এবছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছে মারা গেছেন ৩১ জন! স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্য়ান অনুযায়ী, জুন মাসে রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্য়া ছিল ৬২৪। পরের মাসে অর্থাৎ জুলাইয়ে আক্রান্ত হন আরও ৩ হাজার ৭৭৮ জন। অগাস্ট মাসে আক্রান্ত হন ১৫ হাজার ৬৭২ জন। আর সেপ্টেম্বরে মাত্র ৫ দিনেই ডেঙ্গির কবলে পড়েছেন ২ হাজার ৯৩৯ জন। 
অর্থাৎ গত ৩ মাসে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে ডেঙ্গির সংক্রমণ!

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে মোট ডেঙ্গি আক্রান্ত ২৪ হাজার ৭০৯ জন। এর মধ্যে শুধুমাত্র কলকাতা পুরসভা এলাকাতেই এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫০০ জন। সূত্রের খবর, অগাস্ট মাসে রাজ্যের ১৮টি পুরসভা মিলিয়ে ৩০৮টি ফিভার ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে যে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মানুষ পরীক্ষা করিয়েছিলেন, তাঁদের একটা বড় অংশেরই ডেঙ্গি ধরা পড়েছে বলে সূত্রের খবর।

রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার এই বাড়বাড়ন্তের মধ্যে, বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করে সার্কুলার জারি করেছে স্বাস্থ্য ভবন। শুধু স্বাস্থ্য দফতরই নয়, ডেঙ্গি মোকাবিলায় কোমর বেঁধে নেমেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরও। জেলায় জেলায় ডেঙ্গি পরীক্ষা বাড়াতে, ১৮টি পুরসভাকে এলাইজা মেশিন দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ দুশ্চিন্তায়।
চিকিৎসকরাও উদ্বেগে।

এই অবস্থায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সমানে চলছে রাজনৈতিক তরজা! সামনে পুজো। তার আগে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার দাপট। কীভাবে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।