সন্দীপ সরকার, কলকাতা: রাজ্যে বাড়ছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার দাপট। আক্রান্তরা বেশির ভাগই কর্পোরেশন এবং পৌর  বাসিন্দা। আর এবার শহরের পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দপ্তর পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে আউটডোরের সময়সীমা পরিবর্তন হল। এখন থেকে আর শুধু সকালে নয়, সন্ধ্যেবেলাতেও খোলা থাকবে সরকারি আউটডোর।


সপ্তাহে দুদিন মঙ্গলবার এবং শুক্রবার বেলা দুটো থেকে সন্ধ্যে সাতটা পর্যন্ত আউটডোর খোলা থাকবে। শহরাঞ্চলের বিপুল পরিমাণে নিম্নবর্গের মানুষের সুবিধার জন্য এই পদক্ষেপ। রিকশাচালক গৃহ সহায়িকা ফুটপাতবাসী দিনমজুরদের সুবিধার্থেই এই নির্দেশ। রাজ্যে যে কোনও সরকারি হাসপাতালে আউটডোর সকাল ন'টা থেকে দুপুর ২ টো পর্যন্ত খোলা থাকে। পৌর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোয় এখন থেকে সোম-বুধ-বৃহস্পতি এবং শনিবার সকাল ন'টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত আউটডোর খোলা থাকবে।


পুজোর আগে কার্যতই পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গি (Dengue)। জেলায় জেলায় ক্রমশই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনা (North 24 Parganas) তো বটেই, কলকাতাতেও (Kolkata) লাগামছাড়া থাবা বসিয়েই চলেছে ডেঙ্গি। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পথে ডেপুটি মেয়র। ডেঙ্গি মোকাবিলায় সচেতনা প্রচারে ডেপুটি মেয়র। এদিন কলেজ স্ট্রিটে বর্ণপরিচয় মার্কেটে উপস্থিত হন অতীন ঘোষ। 


উল্লেখ্য, ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের কামারডাঙা রেল কলোনি কার্যত মশার আঁতুড়ঘর।সম্প্রতি তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দারকে নিয়ে এলাকা পরিদর্শনে যান ডেপুটি মেয়র। তাঁর অভিযোগ, রেলকে বারবার বলা সত্ত্বেও কাজ হয়নি। গোটা এলাকাজুড়ে ঝোপঝাড় থেকে জমা জলে গোটা এলাকা হয়ে উঠেছে ডেঙ্গির আঁতুড়ঘর। এলাকায় এডিস মশার লার্ভা সহ জলের নমুনা রেলের কর্মী-অফিসারদের সামনে নিজেই তুলে ধরেছিলেন কেএমসি-র ডেপুটি মেয়র। যার পরে  ৪৮ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের হুঁশিয়ারি, কাজ না হলে পুরসভাই কামারডাঙা রেল কলোনি পরিষ্কার করে রেলের কাছে টাকা দাবি করবে। 


বিশেষ করে জমা জলেই ডেঙ্গির মশার আঁতুরঘর। তাই কোথাও জল জমতে দেওয়া যাবে না। ছাদ থেকে শুরু করে ঘরের আনাচে কানাচে, নর্দমা, বাড়ির চারিধার পরিষ্কার রাখতে নির্দেশ। তবে ঘরে মশারি টানানোর কথা প্রতিবারই এসময় মনে করিয়ে দেয় স্বাস্থ্য দফতর। এনিয়ে রাজপথে মশারি সহ নেমে সচেতনা অভিযান করতে দেখা গিয়েছে পুরসভাগুলিকে।


আরও পড়ুন, দিঘা থেকে কলকাতা আসার পথে বাস দুর্ঘটনা, আহত ১২


গতবছরও পুজোর আগে এবং পরে পড়ে থাকা বাঁশের ফাঁক ফোকরেও জল জমেও আতঙ্ক তৈরি করেছিল। যা মূলত ডেঙ্গির মশার বংশবৃদ্ধির জন্য উত্তম জায়গা। চলতি বছরেও ফিরল সেই আতঙ্ক।এই পরিস্থিতিতে খেয়াল রাখতেহবে যে, আপনার শরীর কেমন আছে। কী কী উপস্বর্গ দেখা দিয়েছে ? যদি ডেঙ্গির উপস্বর্গের কোনও বহিঃপ্রকাশ পান, তাহলে দেরি না করে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবশ্যই গিয়ে যোগাযোগ করুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডেঙ্গি টেস্ট করান। মনে রাখবেন রোগ যতদ্রুত ধরা পড়বে, আপনার সুস্থ হয়ে ওঠার প্রবণতাও তত বাড়বে।