রঞ্জিত সাউ, কলকাতা: ডিএ ইস্যু (DA Issue) থেকে শুরু করে হনুমান জয়ন্তী (Hanuman Jayanti) কিছু গেল না বাদ, একাধিক ইস্য়ুতে 'মুখ্যমন্ত্রী'কে আক্রমণ বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের। মূলত এদিন সকালে নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে আসেন দিলীপ ঘোষ। আর সেখানে এসেই শাসকদলকে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, 'পুলিশের হাতে ছেড়ে দিলেই সন্ত্রাস হবে।' 


'রামনবমীতে বাহিনী নেই, অশান্তি, হনুমান জয়ন্তীতে শান্তি বহাল'


তিনি বলেন,' এখানে যে সরকার চলছে, তারা চায় না শান্তি থাকুক। কারণ এতেই তাদের রাজনৈতিক লাভ। যারা দুবৃত্ত, তাঁরা এমন দাপিয়ে বেড়ায়, কেউ কন্ট্রোল করতে পারছে না। সব ক্ষেত্রেই রং, ধর্ম দেখা হচ্ছে। রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা চলছে। আমরা বারবার বলেছি, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া এখানে শান্তি বজায় রাখা যাবে না। সেটা আদালত মেনে নিয়েছে। দেখা গেল সেটাই ঠিক। রামনবমীতে পুলিশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। গন্ডগোল হতে দিয়েছিল। হনুমান জয়ন্তীতে সেন্ট্রাল ফোর্স আসতেই সব ঠান্ডা। নির্বাচন অবশ্যই সেন্ট্রাল ফোর্স দিয়েই হওয়া উচিত। এখানকার পুলিশের হাতে ছেড়ে দিলেই সন্ত্রাস হবে।' 


২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের স্মৃতি?


তিনি আরও বলেন,' মীরা পাণ্ডে পাঁচ দফায় ভোট করেছিলেন। পরে স্বীকার করেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে হাজার দুয়ারি ঘুরতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কারণ তাদের পরিচালক ছিল স্থানীয় পুলিশ। কিন্তু তবুও সাধারণ মানুষকে রোজ যেভাবে বোমা বন্দুক দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে, রাস্তায় মাঠে বোমা পড়ে আছে, এর একটা উদ্দেশ্য আছে। সাধারণ মানুষের সাহস বাড়ানোর জন্যই সেন্ট্রাল ফোর্স এর দরকার আছে।' 


'হনুমান জয়ন্তীতে রাজ্যপালের মাস্টার মুভ'


দিলীপ ঘোষ বলেন, 'এখন এটা চলন হয়ে গেছে, যে রাজ্যপাল আসবে, তার বিরোধিতা করো। এ রাজ্যে এটা খুব হয়। দু পক্ষ ভাগ হয়ে যায়। আমি প্রথমেই বলেছি, রাজ্যপাল নিরপেক্ষ ভাবে সংবিধানের পক্ষে কাজ করবেন। নতুন এসেছেন। তার মতো এফিসিয়েন্ট মানুষ খুব কম এসেছেন। সময় লাগবে। উনি ডান দিকে পা রাখলে ওরা চেচাচ্ছে। বাঁদিকে পা রাখলে এরা চেঁচাচ্ছে। তিনি যেটা শুরু করেছেন, অন্যরা যখন রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ব্যস্ত, তখন ট্যুর কাটছাঁট করে উপদ্রুত জায়গায় গেছেন। ব্যক্তিগত ভাবে খোঁজখবর নিয়েছেন। কাল পুজো দিয়েছেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে পরিস্থিতি দেখেছেন। প্রশাসক এরকমই হওয়া উচিত। কান দিয়ে নয়। চোখ দিয়ে দেখা উচিত।' 


'বিজেপির যেকোনও কর্মসূচিতেই বাধা'


তিনি বলেন,' এটা নতুন না। যেই বিজেপি শক্তিশালী হল, ভোটে জিততে শুরু করল, তখনই টনক নড়ল। তাকে আটকানোর চেষ্টা হল। এইভাবে আটকানোর চেষ্টা হলে বিজেপি গণতান্ত্রিক ভাবে মোকাবিলা করবে। এ রাজ্যে সব কিছু কোর্ট নির্ণয় করে। চাকরি পাবে কিনা, ডিএ পাবে কিনা। এই সরকার আছে কেন ? লোকে কেন ভোট দিয়ে জিতিয়েছে ? এরা তো কোনও নির্ণয় নেবে না। কোর্ট নেবে। সেন্ট্রাল ফোর্স কোর্ট দিল। সিবিআই কোর্ট দিল। সরকারের কোনও অস্তিত্ব নেই। এটা সুস্থ গণতন্ত্রের লক্ষণ নয়।'


'একই লোক করছে'


তিনি আরও বলেন, 'আরেকটা মজার ব্যাপার। হিন্দুদের উৎসব হলেই ইচ্ছাকৃতভাবে গন্ডগোল হচ্ছে। কারা করছে ? যারা নির্বাচনে গন্ডগোল করে। যারা সিএএ-তে রাস্তায় নেমে গন্ডগোল করে। যারা নুপুর শর্মা ইস্যুতে গন্ডগোল করে। একই লোক করছে। বাহানা করে হিন্দুদের উৎসব আটকে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। পরে তো বিয়ে, শোভাযাত্রা সব বন্ধ করে হিন্দুদের বাড়ির ভিতর ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। ভোট দিতে বেরোবে না হিন্দুরা। তারাই সব লুটেপুটে খাবে। এটা কোর্ট বন্ধ করেছে।'


ডিএ ইস্যুতে ১৭ এপ্রিলের মধ্যে বৈঠকের নির্দেশ আদালতের


তিনি বলেন, ' আমি বারবার বলেছি আলোচনায় বসুন। দিল্লিতে কৃষি আন্দোলন হল। সরকার দশ বার আলোচনায় বসেছে। ওরা মানেনি সেটা আলাদা কথা। পরে দেশের স্বার্থে সরকার সেই আইন তুলে নিয়েছে। এখানে তো কথা বলতেই রাজি না। তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছে। চোর ডাকাত বলছে। এদের ঘাড়ে কাঁঠাল ভেঙে আপনি সরকার চালাচ্ছেন। এরা আপনাকে ব্যালটে ৬০ শতাংশ ভোট দিয়েছে। এটা কি মুখ্যমন্ত্রীর মুখের ভাষা? পারবেন কি পারবেন না, পরের কথা। আলোচনা তো করুন।'