সোমনাথ মিত্র, সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: একধারে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা। কবি যেরকম লিখে গেছেন, তেমনই এই দৃশ্যও দেয় আগমনীর বার্তা। মা আসছেন। কিন্তু, এই কাশফুলই এবার নতুন মাত্রা যোগ করেছে বঙ্গ রাজনীতিতে!


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কাশফুলগুলোকে এককাট্টা করে, তুলো মিশিয়ে লেপ, বালিশ তৈরি হতে পারে। বিকল্প কর্মসংস্থানের প্রশ্নে সম্প্রতি একাধিকবার কাশফুলের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। 

আশ্বিনের শারদ প্রাতে, যে কাশফুলে ভরে গেছে সিঙ্গুরে টাটাদের প্রস্তাবিত ন্যানো কারখানার জমি। মুখ্যমন্ত্রীর কাশফুল প্রস্তাবকে কটাক্ষ করতে, এদিন সেখানেই পৌঁছে গেছিলেন দিলীপ ঘোষ। শুধু তাই নয়, কাশফুল দিয়ে কতটা শিল্প সম্ভব, তা বোঝাতে নিয়ে গেছিলেন বালিশের কভারও। 


চপ মুড়ি ঘুঘনীর শিল্পের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন : দিলীপ ঘোষ
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ' এখানে শিল্প ও চাষ ও নেই শুধু কাশ ফুল আছে। যারা শিল্পের স্বপ্ন দেখাচ্ছে তারা ন্যানো বন্ধ করে দিয়ে কাশফুল দিয়ে শিল্প তৈরি করা স্বপ্ন দেখাচ্ছে। তারা চপ মুড়ি ঘুঘনীর শিল্পের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। ' 
বিজেপিকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে তৃণমূলও। একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বিক্রি করার প্রসঙ্গে টেনে, পাল্টা মোদি সরকারকে বিধেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।

১৪ বছর আগে তৃণমূলের আন্দোলনের জেরে গাড়ি কারখানা না করেই সিঙ্গুর ছাড়তে হয়েছিল টাটাদের। পুজোর মুখে সেই সিঙ্গুরেই কাশফুলকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা। পুজো নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেন দিলীপ ঘোষ। বলেন, ' পুজো উদ্বোধন করেই গিনেস বুকে নাম তুলতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্লাবগুলিকে অনুদান দিয়েছেন, তাই সব পুজোর উদ্বোধন করছেন। নিজের ঢাক নিজেই বাজাচ্ছেন। ' সুরুচি সঙ্ঘে মুখ্যমন্ত্রীর ঢাক বাজানো প্রসঙ্গে কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের। 


বৃদ্ধাশ্রমে মমতা
অন্যদিকে চতুর্থীতে চেতলার নবনীড় বৃদ্ধাশ্রমে প্রতিবছরের মতো এবারও যান মুখ্যমন্ত্রী। কুশল বিনিময় করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে কাছে পেয়ে অন্যরকম সন্ধে কাটান আবাসিকরাও। ছিলেন ফিরহাদ হাকিম ও ইন্দ্রনীল সেনও। আবাসিকদের জন্য শাড়ি, ধুতি, মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ' আমার তো মা নেই। নবনীড়ে এলে মায়ের কথা মনে করি। আমি এখানে না এলে পুজো সম্পূর্ণ হয় না ....' 
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে প্রতিবার কালীপুজো হয়। নবনীড়ের আবাসিকদের তাঁর বাড়ির পুজোয় আমন্ত্রণ জানান মুখ্যমন্ত্রী।