শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা : সংস্কারের জন্য় বিজেপির (BJP) সদর দফতর থেকে সরতে হয়েছে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ও রাহুল সিন্হাকে (Rahil Sinha)। তার বিরোধিতায় অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার নাম করে পোস্টার পড়ল মুরলীধর সেন লেন চত্বরে।
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের ন্যারেটিভটা, বাঙালি বনাম বহিরাগতয় বেধে রাখতে পেরেছিল তৃণমূল (TMC)! সুপার হিট হয়েছিল বাংলা, তার ঘরের মেয়েকেই চায় স্লোগান! এখন ২০২৪-এর মহারণে নামার আগে বাঙালির মন জয়ে সচেষ্ট বঙ্গ বিজেপি, কিন্তু তার মধ্য়েই গেরুয়া শিবিরে কি কার্যত ঘরোয়া ঠোকাঠুকি শুরু হয়েছে? সাম্প্রতিক ঘটনা এখন সেদিকেই ইঙ্গিত করছে।
বিজেপির মুরলীধর সেন লেনের অফিস। এক সময় এখান থেকেই দলের দায়িত্ব সামলাতেন দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহারা । লোকসভা ভোটের আগে মুরলীধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপির এই সদর দফতরে সংস্কার চলছে। যার জেরে বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দুই পূর্বসূরী, রাহুল সিন্হা ও দিলীপ ঘোষকে তাঁদের বরাদ্দ ঘর ছেড়ে দিতে হয়েছে।
এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই ফের উস্কে দেওয়া হয়েছে বিজেপির বাঙালি-বিরোধী তত্ত্ব! বিজেপির মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিস চত্বর ভরে গেছে পোস্টারে, যাতে লেখা, 'দিলীপ, রাহুল বাঙালি বলেই বিজেপিতে কোণঠাসা' ।
কোনও পোস্টারে লেখা, বিজেপি বাংলা চায়, বাঙালিদের নয়! বিজেপি বাংলা চায়, বাঙালিদের নয়।
কোনও পোস্টারে নাম না করে হেভিওয়েট নেতাকে নিশানা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ! পোস্টারের নিচে ছাপা অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা। অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী বলেন, ' বাঙালি বলেই অবহেলিত দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা। বিজেপি ওয়াশিং মেশিন তাই শুভেন্দু অধিকারীর নামে এখন কোনA অভিযোগ নেই। সুকান্ত মজুমদারের মান দিলীপ ঘোষের মতো উন্নত নয়।'
গতবছর জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকীতে ভবানীপুরে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ায় হিন্দু মহাসভার কর্মীদের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের অশান্তি বেধে যায়। সম্প্রতি, পশ্চিমবঙ্গ দিবসকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছিল এই অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা। আর সেকথাই মনে করিয়ে দিয়ে এই সংগঠনের তৃণমূল-যোগের পাল্টা অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।
সুকান্ত মজুমদার এদিন বলেন, ' রাহুল সিনহা দিলীপ দার ঘরই কি ভাঙা হয়েছে! সবার ঘর ভাঙা হয়েছে রি-মডেলিং হচ্ছে রাজ্য অফিস। ঘোলা জলে মাছ ধরতে কেউ কেউ নেমেছে। মমতার পদলেহন করতে ভারতীয় হিন্দু মহাসভাকে দেখেছি । সেই দালাল ভাই এসেছিল না অন্য কেউ তা খতিয়ে দেখতে হবে। আগামী নির্বাচনে অনেক কিছু বোঝাবে বলছে। মুখ্যমন্ত্রী বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন এই চন্দ্রচূড়।
আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। '
সামনে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন। তার আগে বঙ্গ বিজেপির ঘরোয়া টানাপোড়েনের জল কতদূর গড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।