কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতিতে একসঙ্গে দুই যুবনেতাকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত। কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) এবং শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করল তৃণমূল। আর তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়, মানিক ভট্টাচার্যদের (Manik Bhattacharya) সঙ্গে যেখানে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়নি এখনও পর্যন্ত, সেখানে সাততাড়াতাড়ি দুই যুবনেতাকে কেন ছেঁটে ফেলা হল, উঠছে প্রশ্ন। সেই নিয়ে এ বার মুখ খুললেন বিজেপি-র (BJP) সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) গায়ে এত কিছুর পরও কেন আঁচ পড়ল না, প্রশ্ন তুললেন তিনি। 

অনুব্রতর বেলায় সাড়া নেই কেন, প্রশ্ন দিলীপের

মঙ্গলবার কুন্তল এবং শান্তনুকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। সেই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অনুব্রতর প্রসঙ্গ টেনে আনেন দিলীপ। এবিপি আনন্দকে ফোনে দিলীপ বলেন, "সারা বাংলার লোক জানতে চাইছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে এক সপ্তাহের মধ্যে ঝেড়ে ফেলা হল। কুন্তল এবং এদের ঝেড়ে ফেলা হল। কেষ্টর গায়ে হাত দেওয়া হচ্ছে না কেন? ৫৫০ কোটির বেশি টাকার মালিক বলে! তার নিচে হলেই ঝেড়ে ফেলা হবে? এই হল তৃণমূলের দ্বিচারিতা। যা নতুন নতুন নাম উঠে আসছে, কাকে রেখে কাকে বহিষ্কার করা হবে, তা বুঝে ওঠাই দায়।"

কুন্তল এবং শান্তনুকে দল থেকে বহিষ্কার করার এমন তৎপরতা কেন উঠছে প্রশ্ন। কোনও রকম রাখঢাক না করেই সরাসরি মমতা এবং কালীঘাটের দিকে আঙুল তুলেছেন বিজেপি-র নেতা রাহুল সিনহা। তাঁর কথায়, " "শান্তনু-কুন্তলকে নিয়ে কালীঘাটের কোনও বিপদ নেই, এটা বুঝতে পেরেছে। দেড় মাস সময় লাগল কুন্তলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। এই দেড় মাসে ভাল করে দেখা হল, কুন্তলের মাধ্যমে কালীঘাটে টাকা এসেছিল কিনা। যখন বুঝতে পারল, ওদের খেলাটা নিচুস্তরে ছিল, বহিষ্কার করা হল কুন্তল-শান্তনুকে। আর যাঁর কাছ থেকে ৫০ কোটির বেশি পাওয়া গেল, তিনি শুধুমাত্র সাসপেন্ড হলেন। এতেই বোঝা যায় দলের দৃষ্টিকোণটা কেমন।"

Partha Chatterjee: ইশারোঁ ইশারোঁ মেঁ...বুকে হৃদয় এঁকে দেখালেন পার্থ, মুচকি হেসে জবাব দিলেন অর্পিতাও!

সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়িও বলেন, "প্রশ্ন তো স্বাভাবিক! দুর্নীতির দায়ে বহিষ্কার করতে হলে, তৃণমূলের গোটা দলটিকেই বহিষ্কার করতে হবে। এমন কোনও নেতা নেই দলে, যাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নেই। যাঁরা ধরে ধরে লুটেরা বানিয়েছে, তাদের কী হবে? একসঙ্গে ওঠা বসা, বাডি়তে যাতায়াত, পাড়া থেকে তুলে এনে যুব তৃণমূলের নেতা বানানো হয়েছে, তাদের কী হবে। আর এই বহিষ্কারের কোনও মূল্য আছে?"

তৃণমূলের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন বিরোধীদের

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, " "এইগুলো কিছু নয়, বাংলার মানুষের মধ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে মুক্তি পেতে ছোটখাটো কিছু রাজনৈতিক ঘুষ দেওয়া হচ্ছে। দেখানো হচ্ছে যে, দিদি কত সৎ। কিন্তু কারও যদি ক্যান্সার হয়, তার ক্ষতে ব্যান্ডএইড লাগিয়ে লাভ হয় না। দিদির দল দুর্নীতির ক্যান্সারে আক্রান্ত। সেখানে এদের তাড়িয়ে লাভ হবে না। দিদির খোকাবাবুকে তাড়ানো উচিত আগে।"