কলকাতা: সিবিআই-ইডি তুলনা টেনে এমনিতেই শোরগোল ফেলে দিয়েছেন তিনি। তা নিয়ে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে দলের অন্দরে। এ বার আরও একধাপ এগোলেন বিজেপি-র (BJP) সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। জানালেন, বঙ্গ বিজেপি-র (West Bengal BJP) কথাতেই বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্য সরকারকে টাকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র। স্বভাবতই তাতে বিজেপি-র অস্বস্তি বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ কেন্দ্র বকেয়া না মেটানোতেই বাংলার গ্রামেগঞ্জে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে লাগাতার অভিযোগ করে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীরা।


দিলীপের মন্তব্যে ফের বিতর্কের আঁচ!


মঙ্গলবার সকালে ইকোপার্কে প্রাতঃর্ভ্রমণে বেরিয়ে রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়া নিয়ে এমন মন্তব্য করেন দিলীপ। তিনি বলেন, "আমরা অভিযোগ করেছি, যে টাকা লুঠ হচ্ছে। সেই টাকায় পোষা হচ্ছে কর্মী। নেতাদের বাড়িতে এই যে কোটি কোটি টাকা পাওয়া যাচ্ছে, কোথাকার টাকা? কেন্দ্রের পাঠানো টাকা, আর গরিব মানুষের লুঠের টাকা। যে প্রকল্পে টাকার হিসেব পাওয়া যাবে না, টাকা বন্ধ হওয়া উচিত. এতদিন করত না। সব রাজ্যকে সমান চোখে দেখত কেন্দ্র। কিন্তু যেখানে টাকার অপব্যবহার হচ্ছে, দুর্নীতি হচ্ছে এবং আমাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। তাই বার বার টাকা বন্ধ করতে বলে এসেছি। হিসেব দিন, টাকা নিয়ে আসুন।"


স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে বস্তাভর্তি টাকা উদ্ধার হতে দেখা হতে গিয়েছে। পাওয়া গিয়েছে কোটি কোটি টাকার গহনা, বিদেশই মুদ্রা, বিপুল সম্পত্তির নথিও মিলেছে। গরুপাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারিতেও তাঁর মেয়ে, আত্মীয়-স্বজন এবং ঘনিষ্ঠদের নামে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন বিপুল সম্পত্তির পাওয়া গিয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর উঠে এসেছে। সেই প্রসঙ্গ টেনেই দিলীপ এমন মন্তব্য করেন। 


আরও পড়ুন: Anubrata Mondal : কালই ১৪ দিনের হেফাজতের মেয়াদ শেষ, আজ সিবিআই-এর কোন কোন প্রশ্নের মুখে পড়বেন অনুব্রত?


কিন্তু দিলীপের এই মন্তব্যে বিজেপি-র অস্বস্তি আরও বাড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ বকেয়া মেটানো নিয়ে এ যাবৎ একাধিক বার কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত বেধেছে রাজ্যের। বুলবুল থেকে আমফান, ১০০ দিনের কাজ থেকে আবাস ও সড়ক যোজনা এবং সর্বোপরি পণ্য পরিষেবা কর, বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের প্রাপ্য বকেয়া টাকা কেন্দ্রীয় সরকার বাকি রেখেছে বলে বার বার অভিযোগ তুলেছে রাজ্য। সেই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠিও দেন মমতা। এমনকি সম্প্রতি দিল্লিতে গিয়ে তা নিয়ে বৈঠকও করেন। 


বকেয়া নিয়ে দীর্ঘদিন দরে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত


মমতার দাবি, কেন্দ্র প্রাপ্য না মেটানোয় প্রকল্পের রূপায়ণ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কেন্দ্রের কাছ থেকে ১ লক্ষ কোটি  টাকা পাওনা রয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন মমতা। সেই সময় বকেয়া টাকার অঙ্ক এত বেশি নয় বলে দাবি করতে শোনা গিয়েছিল বিজেপি নেতৃত্বকে এমনকি দিলীপকেও। তার পরই দিলীপ জানালেন, বিজেপি-র রাজ্য় নেতৃত্বের কথাতেই টাকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র।