উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, আশাবুল হোসেন, অমিত জানা, কলকাতা :  তৃণমূলকে ( TMC ) হারাতে সরাসরি বিরোধী মহাজোটের  ( Opposition Alliance ) পক্ষে সওয়াল করলেন দিলীপ ঘোষ ( Dilip Ghosh ) । বললেন, এই সরকার বিরোধীদের সঙ্গে যেভাবে ব্যবহার করছে, এর বিরুদ্ধে লড়তে গেলে এক হওয়ার দরকার। আমার মনে হয়, সেটা অনেকটা সাগদিঘিতে সফল হয়েছে। সমর্থন করেছেন শুভেন্দু অধিকারীও।

১৯৭৭ সালে ইন্দিরা গাঁধীকে ( Indira Gandhi ) হারাতে জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে জোটবদ্ধ হয়েছিল বিরোধীরা। ১৯৮৯-তে ফের রাজীব গান্ধীকে হঠাতে বিরোধীরা একইরকম জোট বেঁধেছিল। এবার কি বঙ্গ রাজনীতিতেও সেরকম ছবি দেখা যেতে পারে? জল্পনা উস্কে পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক মুখে দিলীপ ঘোষের মুখে শোনা গেল তৃণমূল-বিরোধী মহাজোটের ডাক! আর তাঁর পাশে দাঁড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী!

কদিন আগেই সাগরদিঘি ( Sagardighi ) বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে, তৃণমূলকে হারিয়েছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী। ২০১১ থেকে তৃণমূলের হাতে থাকা এই আসন, বড় মার্জিনে ছিনিয়ে, আত্মবিশ্বাসে ফুটছে বাম-কংগ্রেস শিবির! আর ঠিক এই প্রেক্ষাপটেই, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের একজোট হওয়ার ডাক শোনা গেল বিজেপি নেতাদের গলায়। 

সম্প্রতি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ' এই যে সরকার যেভাবে ব্যবহার করছে বিরোধীদের সঙ্গে, এর বিরুদ্ধে লড়তে গেলে এক হওয়ার দরকার আছে। আমার মনে হয়, সেটা অনেকটা সাগদিঘিতে সফল হয়েছে'

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গলাতেও একই সুর । বললেন, 'দিলীপদা খারাপ কিছু বলেননি। আমাদের সিনিয়র লিডার। মানুষ চাইছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়ুক। আমাদের কখনওই আদর্শগতভাবে, তেল আর জল তো মিলবে না। তাই একসঙ্গে বিরোধীদের একসঙ্গে পতাকা বেঁধে আন্দোলনটা সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের সকলের উচিত নো ভোট টু মমতা বলা। মানুষই ঠিক করে দেবে তারা বিজেপি কে আনবে না অন্য কাউকে।

তবে এ সম্ভাবনা উড়িয়েই দিলেন মহম্মদ সেলিম । তাঁর মন্তব্য, ' বিজেপি বাঁচবে না। বাঁচার জন্য আক্সিজেন চাইছে। আর অক্সিজেন বিরোধীদের থেকে চাইছে। তার মানে বিজেপি নিজে বিরোধী নয়।' একই মত অধীর চৌধুরীর। বললেন, ' পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অস্তিত্ব শেষ, তাই এসব কথা বলছে। ' 

দিলীপ ঘোষ, শুভেনদু অধিকারীরা যেদিন বিরোধী মহাজোটের ডাক দিয়েছেন, সেদিনই বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন,' 
একটা নির্বাচন নিয়ে আঙুল তুলবেন না। সব মুখোশ খুলে গেছে। বিজেপি সিপিএম কংগ্রেস সব এক হয়ে গেছে। লড়ে যাবে একটাই দল তার নাম তৃণমূল কংগ্রেস।' 

মহারাষ্ট্রে শিবসেনার মতো বিজেপির একদা জোটসঙ্গীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার তৈরি করেছিল কংগ্রেস। এরাজ্য়ে কি সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে? তৃণমূল বিরোধিতায় এক ছাতার তলায় আসতে পারে সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি? সেই উত্তর দেবে সময়।